সোজাসাপটা বক্তব্য এবং লাগামছাড়া আবেগের আরেক নাম যেন ইগর স্টিমাচ। কখনও দেশকে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিচ্ছেন, কখনও ম্যাচ চলাকালীন বিপক্ষের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করে উঠছেন, কখনও বা স্পষ্ট এবং কড়া ভাষায় উষ্মা প্রকাশ করছেন। কারো চোখ রাঙানির ধার তিনি ধারেন না। ফলে, বারবারই তাঁকে খবরের শিরোনামে দেখা যায়। অন্যান্য দেশে ফুটবল ক্লাব এবং জাতীয় দলের কর্তাদের মধ্যবর্তী ঠাণ্ডা লড়াই দেখতে মানুষ অভ্যস্ত। এখন সেই লড়াই ভারতের জাতীয় দল ও ক্লাবগুলির মধ্যেও। সেই বিষয়েই বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে আবারও খবরে ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ ইগর স্টিমাচ।
এই মুহূর্তে ভারতের জাতীয় দলের সামনে সমূহ সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত। এশিয়ান গেমস, ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ালিফায়ার এবং এশিয়ান কাপের মত একের পর এক মেগা টুর্নামেন্টে খেলবে তারা। কিন্তু সামনে আইএসএলের মত প্রতিযোগিতাও রয়েছে। ফলে, জাতীয় দলের শিবিরের জন্য ফুটবলারদের ছাড়তে নারাজ অধিকাংশ ক্লাব ফ্র্যাঞ্চাইজি। এ নিয়ে বিতর্ক আছে বহু আগে থেকেই। শীর্ষস্তরের ক্লাব এবং জাতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে বিবাদও নতুন নয়। কিছু সপ্তাহ আগে ক্লাব কর্তাদের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি দেন ভারতের ক্রোয়েশিয়ান কোচ। এরপরেই সাংবাদিক সম্মেলনে ইগর মন্তব্য করেছেন, “আমার ভাষা প্রয়োগের জন্য মার্জনা করবেন। তবে আমি ভারতে কারও পা চাটতে আসিনি। সত্যি বলতে আমি দ্বিধাবোধ করব না। হয় ওঁরা এই সমস্যা কাটানোর উদ্যোগ নিয়ে আমাকে সাহায্য করুন। অথবা আমাকে বলুন, যে ওঁরা কিছু করতে পারবেন না। আমি সানন্দে বাড়ি ফিরে যাব এবং আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কই থাকবে।“
তবে, স্টিমাচের কর্মকাণ্ড শুধু যে এই আলোচনা বা সমালোচনায় সীমাবদ্ধ নেই, তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। ২০১২ সালে কোচিং জীবন শুরু। রাতারাতি নিজের দেশ ক্রোয়েশিয়ার জাতীয় ফুটবল দলকে ফিফার লিস্টের চার নম্বরে তুলে দিয়েছিলেন। কোচ করেছেন ক্রোয়েশিয়ার তারকা লুকা মড্রিচকে। ২০১৯ সালে ইগর ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই দলের ভোল বদলে গেছে। একের পর এক কাপ জিতেছে দল এবং বহুদিন পর ফিফা র্যাঙ্কিংএ ভারতীয় দল ১০০ ছুঁয়েছে। ছন্নছাড়া ভারতীয় দলকে দেখতেই অভ্যস্ত ভারতবাসী এখন দেখছে, কীভাবে ছোট ছোট পাস খেলে বিপক্ষের বক্সে ঢুকে তছনছ করছেন ভারতের ফুটবলাররা। সমস্ত সাফল্যের চাবিকাঠি ইগরের হাত ধরেই এসেছে। বর্তমানে ইগর তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন। এখন ক্লাব কর্তাদের হাতেই জাতীয় দলের ভবিষ্যত দাঁড়িয়ে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Discussion about this post