যুদ্ধের দামামা সরব হয়ে উঠেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। দুই পক্ষের সেনা পরস্পরের দিকে আঘাত হানছে। গুলি আর বোমার আওয়াজে সবাই তটস্থ। এরই মধ্যে এক জায়গায় আটকে আছে ২০০ জন সেনা। যুদ্ধের আঘাতে তারা ঘায়েল। তবে বাঁচিয়ে আনার উপায় কী? এরই মধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন একজন। যে কিনা রক্ত মাংসের প্রাণী হলেও কোনো মানুষ নয়। তার নাম ছিল ‘শের আমি’ অর্থাৎ প্রিয় বন্ধু।

এবার শেষ চেষ্টায় নামলো ‘শের আমি।’ যে কিনা ফ্রান্সের একটি শহর ভেরদুনে সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতো। ১৯১৮ সালের অক্টোবর মাসে এইরকম একটা কাজে ততদিনে সে সফল। আর এবার তার একটি পায়ে বাঁধা ছিল সংবাদের কাগজটি।

আর সেই পায়েই ছুটে এসে লাগলো শত্রুপক্ষের গুলি। তার পায়ের খানিকটা অংশ ঝুলে যায়। তবু এই প্রিয় বন্ধু হার মানেনি। সে তখনও উড়ছে। এরপরই আরেকটি গুলি এসে লাগে তার বুকে। তবু সে বুকে অদম্য সাহস। নিজের মধ্যে জমে থাকা সবটুকু জোর দিয়ে সে উড়ে চললো গন্তব্যে। বয়ে গেলো রক্ত বন্যা। কিন্তু ‘শের আমি’ থামার নয়। একেবারে শেষ চেষ্টা অটুট রেখে সংবাদ পৌঁছে দিল আমেরিকান সৈনিকদের কাছে।

তবে এখানেই শেষ নয়। আহত অবস্থায় এ প্রিয় বন্ধুকে ভর্তি করা হল হাসপাতালে। ওদিকে বিশ্বযুদ্ধ প্রায় শেষ। আর এদিকে জীবন মরণের লড়াই চলছে তার। আট মাসের সে লড়াইতেও জয়ী হল ‘শের আমি’। আজ আমেরিকার স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটশনের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত তার শরীরটি। আজও এক পেয়ে পাখিটার এ শরীর অদম্য জেদের ভাণ্ডার হয়ে আছে। আর সেই সাথে হয়ে আছে প্রকৃত বন্ধুর এক অনন্য দৃষ্টান্ত। দিনের শেষে লড়াই করে রাজা সে।

Discussion about this post