মানুষ চিরকাল পশুকে ব্যবহার করে এসেছে ভিন্নভাবে। নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে পশুকে বলি করেছে। এখন আবার নিরীহ পশুদের ওপর মানুষ অত্যাচারও শুরু করেছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে এক বিপরীত নিদর্শন স্থাপন করলেন শুভঙ্করবাবু। বাড়ি কলকাতার রাজারহাটে। পেশায় প্রযোজক হলেও সমাজ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
তাঁর দুটি মেয়ে। স্নোয়ী ও কুকী। বড্ড আদুরে এরা। এরা কিন্তু কথা বলতে পারে না, অবলা চারপেয়ে। তবু তাদের অভিব্যক্তি বুঝতে একটুও অসুবিধে হয়না শুভঙ্করবাবুর। লেজ নাড়িয়ে ভালোবাসা জানায়, আবার অভিমানও প্রকাশ করে তারা। তিনমাস আগে ছিল বড় মেয়ে কুকীর জন্মদিন। উত্তরবঙ্গে সামাজিক কাজের মধ্য দিয়েই শুভঙ্কর বাবু পালন করেছিলেন দিনটি। গত ১৫ ডিসেম্বর ছিল ছোট মেয়ে স্নোয়ীর জন্মদিন। তার আবার এ বছর প্রথম জন্মদিন। তার জন্মদিনেও নেওয়া হল বিশেষ এক উদ্যোগ। পরিবেশ রক্ষা দপ্তরের সদস্যের অনুমোদনে বৃক্ষরোপন আয়োজন করলেন তিনি। এমনকি রাস্তার পোষ্যগুলির জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। তবে একাজ শুধুই যে আজ করলেন, এমন ভাবার কারণ নেই। সারা লকডাউন জুড়ে রাস্তার ইতঃস্তত ঘুরে বেড়ানো অবলাদের খিদে নিবারণের দায়িত্বভার নিয়েছেন একাই।
যে কোনও পোষ্যই শুভঙ্করবাবুর হৃদয়কে দুর্বল করে বারবার। দেখতে পেলেই এক ছুট্টে কাছে টেনে নেন ওদের। তারাও লেজ নাড়িয়ে আদর করে ওনাকে। আবার সুযোগ পেলেই জিভ বের করে শুভঙ্করবাবুর কোল জুড়ে বসে পড়ে। এই মায়ার বাঁধনেই বেঁধে ফেলেছে স্নোয়ী ও কুকী। শুধু এদের দুটিকে নয়। রাজপথ কিংবা অট্টালিকা, পোষ্যদের নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করেন তিনি। প্রকৃতি ও পশুকে আগলে রেখেছেন তিনি সাধ্যমতো। এদের আঁকড়ে এমনভাবেই, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কাটাতে চান তিনি।
Discussion about this post