কথায় বলে, “যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে সন্ধ্যে হয়”। কিন্তু আজ দেশে ঘটেছে ঠিক তার উলটো ব্যাপার। বাঘের ভয়ে অন্ধকার নামার বদলে আজ রাজনৈতিক নেতার ভয়ে বাঘ আর শিকার করতে পারছেনা। এমনকি ভুল করে গৃহপালিত গরুকে মেরেও নেতার ভয়ে খেতে পারছে না সেই শিকার করা গরুর দেহ। ঠিক এমনটাই ঘটেছে নাগপুরে। শুধু তাই নয়, কোনো মানুষকে এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত বা আহত না করেও, বাঘটিকে পড়তে হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের রোষে। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগেই তাকে পাকড়াও করে মজা দেখানোর আদেশ এসেছে।
কিন্তু বন সংরক্ষণ বিভাগ এবং বাঘ সংরক্ষণ আধিকারিকদের কথায়, বর্তমানে মানুষের জন্যেই বন্যজন্তুর পরিমাণ কমে গেছে। ফলে কমে গেছে বাঘের খাদ্য। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বন কেটে সাফ করে দেওয়ার ফলে, বাঘের বাসস্থানও উধাও হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা খাদ্যের অভাবে লোকালয়ে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবস্থায়, কোনো বাঘ গবাদি পশু শিকার করলে, তাকে তা খেতে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। মানুষের ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব সরকারের। কোনো বাঘ মানুষখেকো না হওয়া পর্যন্ত তাকে এভাবে পাকড়াও করা যায় না।
আড়াই বছরের বাঘটি তার শাবকদের নিয়ে নতুন বনাঞ্চলের খোঁজে বেরিয়েছিল। যাত্রাপথেই এসেছে রামটেক এবং পারশোনিসহ পনেরোটি গ্রাম। খিদের জ্বালাতে বিগত কয়েক মাসে সেই অঞ্চলে গরুসহ তিরিশটি গবাদি পশু মেরে ফেলার অভিযোগ এসেছে বাঘটির বিরুদ্ধে। তাতেই গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ। তার জেরেই সম্ভবত রাজনৈতিক চাপ এসেছে বাঘটিকে ধরার। মানুষের তো বটেই, এখন বাঘের গো-হত্যাও পাপ বলে ধরা হবে কিনা, এখন সেই প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে।
Discussion about this post