কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর কথা শুনলেই মনে আসে ‘বুড়িমা’র কথা। রোশনাইতে ছেয়ে থাকা চারদিক আর আলোয় ভরে ওঠে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি। সেই সাথে আরও এক বারোয়ারি পুজোর মেজাজ থাকে গোটা এলাকা জুড়ে। তবে এ শহরের অন্যতম আবেগ বলা যায় ‘বুড়িমা’র পুজোকে। যে পুজো আয়োজিত হয় চাষাপাড়ায়।
কথিত আছে, রাজবাড়ির পুজোর পর থেকেই এ পুজোর শুরু। এ পুজোর ইতিহাস শুনলে অবাক হতে হয়। মা জগদ্ধাত্রী স্বয়ং রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে পুজোর আদেশ দেন। টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার কারণে রাজা এক সময়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। স্বপ্নাদেশ পান চাষা পাড়ার লেঠেলদের দিয়ে পুজো করানোর জন্য। সেই থেকে পুজো শুরু।
আর একটি কাহিনীও প্রচলিত আছে। শোনা যায়, আর্থিক সাহায্য করার জন্য রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সবার মধ্যে পুজোকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেই থেকেই চাষাপাড়া সার্বজনীন পুজোর শুরু। এর সাথে অবশ্য রাজবাড়ির পুজোও চলে। প্রায় ৭০-৭৫ বছর আগে থেকে এই প্রতিমার নাম হয় ‘বুড়িমা’। প্রতি বছর ঘটা করে আয়োজন করা হয় পুজোর।
তবে এ পুজো নির্ভর করে মানুষের দানের ওপর। সাথে থাকে চাঁদা। সম্পূর্ণ দানের টাকায় ধুমধাম করে আয়োজিত হয় পুজো। গোটা কৃষ্ণনগরের বিশ্বাস এই মা খুব জাগ্রত। এমনকি ‘বুড়িমা’র কথা ছড়িয়েছে বিদেশেও। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মায়ের জন্য আসে গয়না, শাড়ি ইত্যাদি। মানুষের বিশ্বাস বুড়িমা কাউকে খালি হাতে ফেরান না। আর এ বিশ্বাসই বাঁচিয়ে রাখছে ‘বুড়িমা’র পুজোকে।
Discussion about this post