উত্তর ব্রাজিলে আমাজন নদী ও আটলান্টিক মহাসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত মারাজো দ্বীপ। এই এলাকার পুলিশের টহলদারির চালানোর এক অনন্য উপায় গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে। এখানে পুলিশ টহল দেয় এশিয়ান জল মহিষের পিঠে চড়ে। এশিয়া থেকে এই মহিষ কিভাবে মারাজোতে পৌঁছালো, তা নিয়ে নানা মতপার্থক্য আছে। তবে মারাজোর জলবায়ু এই জাতের মহিষের জন্য অনুকূল হওয়ায় তাদের সংখ্যা বেড়ে ৪.৪০,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই মহিষদের দিয়ে স্থানীয় মানুষ নানা কাজও করিয়ে থাকেন। যেমন, গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়া, কৃষকদের কৃষিকাজে সাহায্য করা ইত্যাদি। এমনকি স্থানীয় উৎসবে এদের দৌড় এক অন্যতম বিনোদনের উপাদানও বটে।
তবে, এই জল মহিষদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভূমিকা হল আইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজে পুলিশের বাহন হিসেবে নিযুক্ত থাকা। মারাজোর এই পুলিশ বাহিনীকে বলা হয়, ‘বাফেলো সোলজারস’। প্রায় তিন দশক আগে যখন মারাজোতে বন্যা হয়, সেইসময় প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনের জন্য এই প্রাণীদের ব্যবহার করা শুরু হয়। বর্ষাকালে এখানকার কর্দমাক্ত ম্যানগ্রোভ অঞ্চল ঘোড়া বা অন্যান্য যানবাহনের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এই বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল এবং আজও সেই প্রথা বহাল রয়েছে।
মহিষের পিঠে টহলরত সশস্ত্র পুলিশ এই দ্বীপের এক বিশেষ প্রতীক, যা পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে বর্তমান সময়েও প্রশাসনিক প্রয়োজনে তো বটেই, সাথে দৈনন্দিন কাজেও এই প্রাণীদের ব্যবহার এক উদাহরণ স্থাপন করেছে। মারাজোতে মহিষকে শক্তি এবং সহযোগিতার প্রতীক হিসাবে ধরা হয়। মারাজোর তীরে মিলিটারি পুলিশ ইউনিটের সদর দপ্তরটি বুলেটের খাপ দিয়ে সজ্জিত। এখানে একটি পেশিবহুল মহিষের প্রতিমূর্তি রয়েছে যার হাতে আছে একটি শটগান, যা এই দ্বীপের জল মহিষকে সারা বিশ্বের কাছে ‘আইকনিক’ করে তুলেছে।
Discussion about this post