বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। নিরামিস থেকে আমিষ রকমারি খাদ্যের সমন্বিত বাঙালির মেনু। তবে শুধুই বাঙালির রসনাতৃপ্তির জন্য বাংলাদেশে রয়েছে এক গোটা এলাকা, ভাবা যায়! প্রাচীন শহর ঢাকার অন্যতম প্রাচীন ও ব্যস্ত এলাকা বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি। আর এই গলিতেই বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে রসনাবিলাসী মানুষের জন্য নামিদামি হোটেল-রেস্তোরাঁ। এখানকার শতাধিক প্রাচীন প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম পুরান ঢাকার ‘বিসমিল্লাহ কাবাব ঘর’।
ঢাকার ২৭/বি, কাজী আলাউদ্দিন রোডে নাজিরা বাজার চৌরাস্তার কাছেই অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বিসমিল্লাহ কাবাব ঘর। গুলিস্তান এসে বংশালের প্রধান সড়কে ঢুকে হাতের ডান দিকে আলু বাজার হয়ে ঠিক শেষ মাথায় চৌরাস্তার বাম পাশে তাকালে বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরটি দেখা যাবে। ১৯৯০ সালে মো. খোরশেদের হাত ধরে শুরু হয় বিসমিল্লাহ কাবাব ঘর। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এখানকার তৈরী চিকেন কাবাব, বিফ কাবাবের জন্য ভোজনবিলাসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কাবাব ঘরটি। এরপর ১৯৯৫ সালে মো. খোরশেদের মৃত্যুর পর তার ছেলে হাবিবুর রহমান ব্যবসাটির হাল ধরেন।
বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের তৈরি সুস্বাদু কাবাবের টানে উত্তরা, বনানী, গুলশান, ধানমন্ডিসহ আশপাশের এলাকায় লোকজনও আসেন এখানে। সন্ধ্যার পর ক্রেতায় ভর্তি হয়ে যায় কাবাব ঘর। তবে জায়গার সমস্যার কারণে ক্রেতাদের বসার জায়গা ঠিক মত পাওয়া যায় না। দোকানের একজন কর্মচারীর মতে, “বিকাল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে কাবাব ঘরটি। সন্ধ্যা হলেই একটিও চেয়ার টেবিল ফাঁকা থাকে না এই কাবাব ঘরে। বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের কোথাও কোনো শাখা নেই।”
বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের অন্যতম আকর্ষণ এখানকার মেনুর বৈচিত্র্য। ৫ টাকা থেকে শুরু ১১০ টাকা পর্যন্ত কাবাবের তালিকায় রয়েছে চিকেন চাপ, গরুর বটি কাবাব, খাসির তিরি কাবাব, মুরগির গিলা-কলিজা ফ্রাই , টিকিয়া সহ নানা মুখে জল আনা রেসিপি। এখানে পরোটার দাম মাত্র ৫ টাকা এবং সমস্ত কাবাবের সাথে স্যালাড ফ্রি পাওয়া যায়। বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের বর্তমান মালিক হাবিবুর রহমানের মতে, “সন্ধ্যে হলেই তরুণ-তরুণীদের বেশি দেখা যায় কাবাব ঘরে। এখানে কলেজ-ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বেশি আসে। আমরা সবসময় কম পয়সার মধ্যে ভালো রুচিসম্মত ও টাটকা খাবার পরিবেশন করার চেষ্টা করে থাকি।”
Discussion about this post