লকডাউনের ফলে কর্মসংস্থানে ভাটা পড়েছে সমাজের একটা বড় অংশের মানুষের। সবচেয়ে করুণ দশা আনা দিন খাওয়া মানুষদের। এমনিতেই নেই কর্ম সংস্থান, তার ওপর ঝড়ের দাপটে অনেকেরই হারিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লক ও রাজনগর ব্লক মূলতঃ আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। এই এলাকার মাটি এতটাই অনুর্বর যে, ফসল ফলাতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় মানুষদের। আবার ফসল ফললেও তার পরিমাণ নিতান্তই যৎসামান্য। ঠিক এই অবস্থায় এগিয়ে এল কোয়ারেন্টাইনড স্টুডেন্টস ইয়ুথ নেটওয়ার্ক বা QSYN। তাদেরই উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে ‘পিপলস কিচেন’ বা ‘জনগণের রান্নাঘর’। যার মাধ্যমে প্রতিদিন কয়েকশো অসহায় মানুষদের মুখে তুলে দেওয়া হচ্ছে দু’মুঠো খাবার। গত ১৪ এপ্রিল থেকেই শুরু হয়েছে পিপলস কিচেনের কাজ।
বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের একটি আদিবাসী গ্রাম মুসলিয়ায় কাজ শুরু করেছে QSYN। মূলতঃ ভাত, ডাল, সবজি, খিচুড়ি, ডিমেরও আয়োজন করা হয় এই কিচেনে। এই অভিনব উদ্যোগে খুশি স্থানীয় মানুষরাও। অন্যদিকে QSYN গত ১২ মে থেকে বীরভূমের রাজনগর ব্লকেও তিনটি গ্রাম নিয়ে(বাঁশবনা, বাসা গ্রাম, রামনগর) গঠন করেছেন ‘পিপলস কিচেন’। এভাবেই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ধ্রুবজ্যোতি, রণজিৎ, কোয়েল, সৌভিক, সৌম্যদীপরা।
ডেইলি নিউজ রিলকে উদ্যোক্তারা জানালেন, কিছু স্বহৃদয় ব্যক্তির সাহায্য তাদের কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অনেক সময় তাদের জমির ফসল দিয়ে যান এই কিচেনে। ফলতঃ এই কিচেনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাদের আরও সুবিধা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে তারা খাবার তুলে দিচ্ছেন দুঃস্থ মানুষের মুখে। ভবিষ্যতে যাতে আরও বেশি করে তারা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন সেটাই এখন তাদের লক্ষ্য। তাদেরই একজনের বক্তব্য, আমাদের আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন এই কিচেন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এগিয়ে আসুন। কোন দান বা ত্রাণ নয়, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ান।
Discussion about this post