বাড়িতে শিশুরা থাকলে খেলনা তো থাকবেই। বেশিরভাগই মনে করে থাকেন খেলনা গুলো চীনের তৈরি। কিন্তু আদতে তা সত্যি নয়। খেলনার বিপুল ভাণ্ডার রয়েছে বাংলাদেশেই। খেলনাগুলোর গায়ে লেখা, ‘মেড ইন বাংলাদেশ।’ বাংলাদেশের একটি প্লাস্টিক দ্রব্য অ্যাসোসিয়েশন বিপিজিএমইএ। সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশে এখন শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিকের খেলনা তৈরি করছে। তার মধ্যে বেশ বড় মাপের প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১০-১২টি।
শুধুমাত্র খেলনা তৈরি হচ্ছে তাইই নয়। সে খেলনা পাড়ি জমিয়েছে বিদেশেও। তাতে বেশ বৈচিত্র্য এসেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। ইতিমধ্যে খেলনা রপ্তানিতে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২২%। শিশু মনের তৃষ্ণা তো মিটছে ঠিকই। তবে সেই সাথে বাড়ছে দেশের আয়ের গ্রাফ। খেলনা রপ্তানিতে বাংলাদেশের আয় হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৭১ লাখ ডলার। বিশ্ববাজারে খেলনা রপ্তানিতে আয় বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। কুমিল্লার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে খেলনা রপ্তানি হয় সুদূর জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান ও হংকংয়ের মত দেশগুলোতে।
দেশের পণ্য বিদেশে রপ্তানি হবার আনন্দ একদিকে। তবে অন্যদিকে এই খেলনার প্রতিষ্ঠানগুলোতে রয়েছে শেষের বহু মানুষের কর্ম সংস্থানের খোঁজ। জাপানের মত দেশের খেলনা বাজারেও রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের খেলনা। কিন্তু ব্যবসার শুরুতে এক ব্যবসায়ীর পণ্য অন্য ব্যবসায়ী নকল করার ফলে অনেকে ক্ষতির মুখে পড়েন। এ শিল্পে তখন উদ্ভাবনের কোনো তকমা ছিল না। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তৈরি হত দ্বন্দ্ব। এটা নিয়ে প্রায়ই সালিসে বসতে হতো বিপিজিএমইএকে। এরপর শুরু হয় খেলনাতে শুরু হয় পেটেন্ট প্রক্রিয়া। তাতে কমে এসেছে নকল হবার প্রবণতা।
বাংলাদেশে সব থেকে বড় খেলনার বাজার রয়েছে পুরান ঢাকার চকবাজারে। বর্তমানে সেখানে গড়ে উঠেছে প্রায় কয়েকশো দোকান। এক সময়ে এই খেলনার ব্যবসা ছিল বছরে দু থেকে তিন মাস। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই বিক্রি হয় খেলনা। এ কেবল ব্যবসা নয় হয়ে উঠেছে শিল্প। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সামিল হয়েছে অনেক মানুষ। খুব ছোট আকারে শুরু হলেও এ ব্যবসার পসার নিয়ে আর নতুন করে কিছুই বলার নেই।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – কালের কন্ঠ
Discussion about this post