‘মৌলবাদী ভয়ংকরী’! কথাটা অবশ্যই সত্য। ধর্মের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস থাকা বা না থাকার ওপর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তবে গোঁড়া ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাস করা কখনই কাম্য নয়। আর এই ধর্মীয় গোঁড়ামির জাঁতাকলে অনন্তকাল ধরে পিষে চলেছে নারীরা। এর থেকে কোনও ধর্মের নারীরাই রেহাই পায় না। “যতই এশিয়া কাপ জেত আর আমেরিকা কাপ জেত, কোনও হুজুর কোনওদিনও তোমাদের বিয়ে করবে না।” আজ্ঞে হ্যাঁ, তীব্র নারী বিদ্বেষী নোংরা আক্রমণ সামাজিক মাধ্যমে করা হল, যার একমাত্র লক্ষ্য ছিলেন সদ্য সাফ কাপ জয়ী বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল দল।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দাপটের সেই ঐতিহ্য সেই আদি যুগ থেকেই চলে আসছে। পর্দার আড়ালে রাখা, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে না দেওয়া থেকে শুরু করে মেয়েদের পোষাক-আশাকের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ঠিক করে দেওয়া তো রয়েছেই। তাছাড়াও বাড়ির বাইরে চাকরি করতে না দেওয়া এসব নানান সমস্যার মুখোমুখী রোজ দাঁড়াতে হয় মেয়েদের। পিতৃতান্ত্রিক সমাজকে টপকে যে কোনও কাজই মহিলারা করলে তা ধর্ম বিরোধিতায় পরিণত হয়।
সম্প্রতি ফেসবুকের একটি পোস্টে দেখা যায় এক মৌলবাদী মানসিকতার মানুষ বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল দলের ম্যাচ জয়ের মুহূর্তের ছবি আপলোড করেছেন অত্যন্ত ঘৃণ্য মন্তব্যের সাথে। মহিলা দলের জয়ের শুভেচ্ছা জানান তো দূরের কথা, এরকম মহিলাদের মানুষ হিসেবেই গণ্য করেন না তাঁরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলাকে মনে করা হয় অসভ্য এবং অপরাধমূলক আচরণ। এছাড়া ফুটবল বা ক্রিকেট খেলার পোশাক শুধুমাত্র পুরুষের জন্যই হতে পারে, আর তার অন্যথা হলে? হতে হবে তীব্র নিন্দা এবং অপবাদের শিকার। তবে নেট নাগরিকরা চুপ না থেকে যথাযোগ্য জবাব দিয়েছেন ওই ব্যক্তিকে। তবে সমাজের অর্ধেক আকাশ যে নারীরাও সে কথা সমাজের প্রত্যেকে কবে বুঝবে সে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
Discussion about this post