বঙ্গভঙ্গের সময় থেকেই শুরু হয়েছিল বিদেশি জিনিস বর্জন করা। আর সেই সূত্র ধরেই দেশীয় বেকারি শিল্পের প্রতিষ্ঠা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকার্স অ্যাসোসিয়েশন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় তিন হাজার ছোট বেকারি রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন বড় বড় বেকারি ব্র্যান্ডগুলো ছোট ছোট বেকারি শিল্পে নানাভাবে প্রভাব ফেলেছে। বড় ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় ছোট ছোট বেকারিগুলোর মূলধনের পরিমাণ কম। তাদের পক্ষে সবসময় সম্ভব হয় না প্রচার চালানো। তাই ক্রেতারা অনেক বেকারির নামও জানেন না এবং সেখানে ভিড়ও জমান না। এই বড়ো ব্র্যান্ডগুলোর কাছে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সুবিধা বেশি থাকায় তারা ছোট বেকারিগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে পারছে। আর অন্যদিকে, এই বড় বড় ব্র্যান্ডের পণ্যগুলোর বিজ্ঞাপন ও প্রচার বেশি থাকায় সেগুলোর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। ফলে মার খাচ্ছে ছোট বেকারিগুলোর বিক্রি।
হুগলীর শ্রীরামপুরের একটি বেকারি হল জেম বেকারি। এটি ২০১৫ সালে আসাদুর রহমান চালু করেন। জেম বেকারির বর্তমান অবস্থা ভালো বলা যায়। বেকারিটি এখনও তার ঐতিহ্যবাহী স্বাদের জন্য বিখ্যাত। এটি স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকদের মধ্যে সমানভাবে জনপ্রিয়। বেকারিটিতে বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট, কেক পাওয়া যায়। তারা নিজেরা এগুলো তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করে। এখানে বেকারি বিস্কুট হোক কিংবা কেক, একটি প্যাকেট সর্বনিম্ন ২৪ টাকা থেকে শুরু। শুধুমাত্র শ্রীরামপুরেই নয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতে জেম বেকারির পণ্য যায়। বিভিন্ন বড় বড় ব্যান্ড থাকার সত্ত্বেও আজও জেম বেকারি বাঁচিয়ে রাখেছে নিজেদের অস্তিত্ব।
জেম বেকারির স্বাদ, এবং স্থানীয় জনপ্রিয়তার কারণে এটি বড় ব্র্যান্ডগুলির সাথে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যেতে সক্ষম। বর্তমানে, জেম বেকারি তার ঐতিহ্যবাহী খ্যাতি ধরে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা নতুন নতুন পণ্য বাজারজাত করছে। তবে বেকারি মালিকের মতে, তাদের বড় ব্র্যান্ডগুলোর সাথে তেমন কোনো রকমের কম্পিটিশন নেই। তারা বলছেন, বড়ো ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রির পদ্ধতি আলাদা তাদের নিজস্ব আউটলেট আছে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি আছে। আর এদিকে জেম বেকারির ব্যবসা মূলতঃ ডিলার ভিত্তিক।
Discussion about this post