টাকাপয়সা ছাড়া আমাদের জীবন অচল। টাকা ছাড়া কিছুই মেলে না বিনামূল্যে। সারা পৃথিবী বর্তমানে গুগল পে, ফোন পে ইত্যাদি পদ্ধতিতে টাকা বিনিময় করছে। আর ঠিক সেইসময় ভারতের একটি শহরে নাকি টাকা ব্যবহারই করা হয় না! টাকা ছাড়া এখানে মানুষ জীবন কাটায় ভাবলেই অবাক লাগে। ১৯৬৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তৈরি হয়েছিল এই শহর। শহরের নাম অরোভিল। অরোভিল শহরের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ১২৪টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
চেন্নাই থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শহর। ইউনেস্কোর সহযোগিতায় এই শহর অরোভিল প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী অরবিন্দ সোসাইটির ‘মা’ মীরা আলফানসা। ৩০ শতাংশ ভারতীয় নিয়ে বসবাস করা এই শহরের জনসংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। মোট ৪২টি দেশের মানুষ এখানে একত্রে বসবাস করে। ব্রিটিশ আর্কিটেক্ট রজার অ্যাঙ্গার পরিকল্পনা করে এই শহর তৈরি করেন। এই শহরের মাঝে রয়েছে একটি মাতৃমন্দির। যেখানে ধ্যান তপস্যা করার জন্য মানুষ একত্রিত হয়।
অন্যান্য শহরকে খুব সহজেই টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে অরোভিল। জীবনযাপনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সমস্তটাই রয়েছে এই শহরে। স্বতন্ত্র নিয়মনীতি অনুসারে পরিচালনা করা হয় এই শহরকে। তাই প্রয়োজন হয় না টাকার। হাসপাতাল, স্কুল এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধাও রয়েছে অরোভিলে। অরোভিল ‘সেবার বদলে সেবা’ নীতিতে বিশ্বাসী। এই নীতি প্রাচীন বিনিময় প্রথারই এক সংস্করণ। এই শহরের বাসিন্দারা সেবার মাধ্যমে শহরের উন্নয়নে সহায়তা করে। যেমন সাবান, ধূপকাঠি, তেল ইত্যাদি তৈরিতে সাহায্য করা। অরোভিল ফাউন্ডেশন থেকে এই কাজের বিনিময়ে নাগরিকেরা কিছু অর্থ বেতন হিসেবে পায়। তবে এই শহরে তা খরচ করার প্রয়োজন হয় না। আর এই দ্রব্য শহরের বাইরে বিক্রি করে যা আয় হয়, সমস্তটাই শহরের উন্নয়ন এবং বাসিন্দাদের যাবতীয় খরচ বহনে ব্যয় করা হয়। এরকম অদ্ভুত ধরনের অর্থব্যবস্থাকে সম্মানের সঙ্গে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত সরকার।
Discussion about this post