করোনার প্রকোপে সরকারি নির্দেশে আমরা এখন সকলেই গৃহবন্দী। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে একজোট হয়ে এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার বার্তা নিয়ে হাজির হল এক নাটকের দল। ‘একতার মধ্যেই শক্তি’, এই বক্তব্যকে বোঝানোর জন্য ‘বরানগর প্রতিশ্রুতি’ নামক নাটকের দলটি একটি অভিনব প্রচেষ্টায় সামিল করলেন নিজেদের। সম্পুর্ণ চলভাষের মাধ্যমে তাঁরা বানিয়ে ফেলেছেন আস্ত একটি শ্রুতিনাটক। বাংলায় যা এই প্রথম। ১১টি ভিন্ন জায়গায় বসে, মোবাইল ফোনে কনফারেন্সের মাধ্যমে রেকর্ড হওয়া ‘লকডাউন সংলাপ’ নামে শ্রুতিনাটকটির মুখ্য আকর্ষণ কিন্তু অন্য। ‘প্রতিশ্রুতি’র অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেই প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী জগন্নাথ বসুও অংশগ্রহণ করেছেন এই উদ্যোগে।
লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে এক বাঙালি যৌথ পরিবারের সকাল ১০ টায় বিভিন্ন ঘটনার খন্ডচিত্র এই নাটক। নাটকটি রচনা এবং পরিচালনা করেছেন বরানগরের বাসিন্দা সুমিত অধিকারী। আবহ দিয়েছেন অলকেশ দে সরকার। নাটকের রচয়িতা ও পরিচালকের কথায়; এর আগে গল্প বা কবিতা লিখলেও, নাটক লেখা এই প্রথম। লকডাউনে বাড়িতে বন্দীদশায় থাকতে কারই বা আর ভাল লাগে! এই বন্দী দশায় একটু বিনোদনের রসদ জুগিয়ে মানুষকে সাময়িক আনন্দ দেওয়ার জন্যই তাঁর এই প্রচেষ্টা। তাছাড়া লকডাউন চললেও তা মেনে চলছেন না বহু মানুষ। রাস্তা-ঘাটে বাজার করাই হোক কিংবা পাড়ার মোড়ে আড্ডা, বন্ধ হচ্ছে না কোনও টাই। এই শ্রুতিনাটকটির মাধ্যমে তাই মানুষকে ঘরবন্দী থাকার এক সামাজিক বার্তাও দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় তার তরফে।
নাটকের আরেক অন্যতম অংশগ্রহণকারী মিতুল চ্যাটার্জী বলেন, তাঁদের এই প্রচেষ্টাটি অত্যন্ত অভিনব এবং প্রথম। কনফারেন্সের মাধ্যমেই তাঁরা রিহার্সালও করেছেন। নাটকটির মাধ্যমে একটি সামাজিক গল্প উপহার দিতে চেয়েছেন সাধারণ মানুষকে। শ্রোতারা নাটকটিকে আপন করে নিলে তবেই এটি সাফল্য পাবে। তাই শ্রোতাদের নাটকটি শোনার অনুরোধও জানান তিনি। জগন্নাথ বসু ও মিতুল চ্যাটার্জী ছাড়াও আরও ১২ জন কলাকুশলী এই নাটকটিকে নিজস্ব রূপ দিতে সাহায্য করেছেন। তপতী অধিকারী, অর্ণব ঘোষ, নিবেদিতা ঘোষ , বিবেক সাহা দালাল প্রমুখের কণ্ঠস্বর অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই কঠিন সময়ে ঘরবন্দী মানুষকে বিনোদনের মাধ্যমে সামাজিক বার্তা দেওয়ার এই প্রচেষ্টা সত্যিই নজরকাড়া।
Discussion about this post