সকাল থেকেই চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তোড়জোড়। নাহ, কোন উৎসবের নয়। যদিও মহামারী উৎসব চলছেই দিকে দিকে। তারই দোসর হয়ে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির হচ্ছে ঘূর্ণি ঝড় ‘ইয়াস’। এসবের মাঝেই কাজে বিশ্রাম নেই আলতাফ হোসেন এবং তার স্ত্রী আসমা খাতুনের। চারটি বাঁশের খুঁটি জোড়া লাগাতে না পারলে রাতে ঘরকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টাটিও জলে যাবে। তারপর তো আশ্রয় নিতে হবে রিলিফ সেন্টারে। এই বাঁশের খুঁটির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে সুন্দরবনের দুর্যোগে খাপ খাওয়ানোর অভিনব এক গল্প। তবে এক যুগ পেরিয়ে গেলেও মোছেনি ভয়াবহ আইলা সুপার-সাইক্লোনের স্মৃতি। ভয়ঙ্কর আইলার আঘাতের পর একযুগ পার হলেও রয়ে গেছে তার ক্ষতচিহ্ন। এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি বহু ক্ষতিগ্রস্ত। ঘূর্ণিঝড় ইয়াশ চরম আঘাত হানতে পারে, এ আশঙ্কায় নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারীভাবে বাঁধ মেরামত করা হলেও তা মজবুত না হওয়ায় প্রতিবার কোটালের সময় তাদের আতঙ্কে থাকতে হয়। ঘূর্ণিঝড় আমফানের ভয়ে অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তারা ত্রাণ চান না, চান শক্তিশালী বেড়িবাঁধ। সুন্দরবনের অধিকাংশ গ্রামের বাড়ি এক সময় ছিল সমতল জমিতে। তখন ঘরের সামনে উঠোন ছিল। উঠোনে খেলাধুলা করতো শিশুরা। ঘরের আশপাশে ছিল সবজির বাগান। কিন্তু সেই দিন কেড়ে নিয়েছে ২০০৯ সালের বিধ্বংসী আইলা।
গত কয়েক বছরে দুই বাংলার উপকূলে সাইক্লোনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বেড়েছে সাইক্লোনের শক্তিও। নদীর ভাঙন এবং জলোচ্ছ্বাসও বেড়েছে। এইসব দুর্যোগে উপকূল অঞ্চলের বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়িঘর হারায়। “ঘরপোড়া গরু সিন্দুরে মেঘ ডরায়।” বাংলার এই প্রচলিত প্রবাদটিকে সামান্য পাল্টে বলা যেতেই পারে, দুই বাংলার উপকূল এবং সুন্দরবনের মানুষ ঘূর্ণি ঝড় দেখলেই ডরায়।
তথ্য ঋণ – risingbd.com এবং বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post