দক্ষিণবঙ্গের হাওয়া এখন নরমে গরমে বেশ সরগরম। আবহাওয়া তো রয়েইছে, তার সঙ্গে ভোটের উত্তেজনা– সব মিলিয়ে একেবারে তপ্ত জ্বলন্ত পরিবেশ। এই পরিবেশে মানুষের একেবারে হাঁফিয়ে ওঠার জোগাড়! তবে স্বস্তি যেটুকু তা হল বেশ কিছু ক্ষেত্রে গরমের ছুটি। আর এই ছুটিতে টুক করে উত্তরবঙ্গে পাড়ি দেওয়াটা আরও বেশি স্বস্তির। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে উত্তরবঙ্গ মানেই শুধু আর দার্জিলিং নেই। অফবিট প্রেমীদের কল্যাণে নতুন নতুন অনেক জায়গাই এখন বেশ ভাইরাল। তাদের মধ্যে বেশ কিছু নামও একেবারে খাসা। এই যেমন রঙ্গীত মাজুয়া, দার্জিলিং এর আশেপাশে উত্তরবঙ্গের অফবিট পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি।
নিখাদ পরিবেশে পাহাড়ের কোলে অবস্থিত লুকোনো ছোট্ট একটি গ্রাম রঙ্গীত মাজুয়া বা অনেকে মাজুয়া গ্রাম বলেই চেনে। ৫০৪২ ফুট উচ্চতায় এবং দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩৪ কিমি দূরত্বে অবস্থিত এই গ্রাম। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে রঙ্গীত নদীর উপনদী শ্রীখোলা। নুড়ি -পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলছে ছোট্ট জলধারা। কংক্রিটের শহর থেকে রেহাই পেতে যদি নিস্তব্ধ নিরিবিলি পরিবেশ চান তাহলে এই গ্রামটি একেবারেই আপনার জন্য আদর্শ।
রাস্তার পাশে কিছুটা ব্যবধানে মাঝে মাঝেই রয়েছে হাতে বানানো বাঁশের ওয়েস্টবিন। এখানে হরিণের দেখা মিলবে, হয়তো বা হরিণ খাদকও রয়েছে। তবে যারা পাখি ভালোবাসেন তাদের জন্যেও রঙ্গীত একটি দারুন জায়গা। নানান পাহাড়ি পাখিদের কিচিরমিচিরে কখন যে সময় কেটে যাবে তা বোঝার উপায় নেই। এছাড়া রঙ্গীত থেকে মানেভঞ্জনের আশেপাশে, সুখিয়া থেকে ঘুমের আশেপাশে সব গ্রামগুলোতে সহজেই ঘুরে আসতে পারবেন। খুব বেশি পর্যটকের ভিড় একেবারেই নেই, তাই নিজের মতো করে প্রকৃতির নিখাদ স্বাদকে উপলব্ধি করার আদর্শ জায়গা এই গ্রাম।
বর্ষাকাল বাদে বছরের যে কোনও সময়ই এখানে বেড়াতে আসা যায়। কারণ এই সময় চরিদিক বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে। জেনে নিন যাবেন কিভাবে। দার্জিলিং থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছতে পারেন। তাছাড়া নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে রিজার্ভ গাড়ি নিয়েও পৌঁছতে পারেন সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টার যাত্রাপথে। আবার মানেভঞ্জন থেকে গ্রামটির দূরত্ব মাত্র চার কিমি, তাই মানেভঞ্জন গিয়ে থাকলে অবশ্যই ঘুরে আসুন উত্তরবঙ্গের এক টুকরো লুকোনো স্বর্গ থেকে।
চিত্র ঋণ – সুশান্ত রায়
Discussion about this post