“ছুটছে সে খিদের জ্বালায় এখান থেকে সেখান; বুঝলো নাকো অবুঝ মানুষ করল পাঁচকান।” বন্যরা সত্যিই বনে সুন্দর আবার কখনো কখনো এরা মনুষ্য সমাজে ঢুকে পড়ে বৈকি। কেউ আসে পথ ভুল করে কেউ বা আসে ক্ষিদের তাড়নায়। কিন্তু এদের মধ্যে কয়জনই বা ফিরে যায় আবার তাদের পরিচিত পরিবেশে। মনুষ্য সমাজে অনধিকার প্রবেশের পরিণাম হয় মৃত্যু!! আর এই অবাঞ্ছিত মৃত্যু ঠেকাতে দিন রাত এক করে কাজ করে চলেছে কিছু মানুষ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই রকমই এক সংস্থা STAND FOR OUR ENDERGERED WILDLIFE ( SEW) যারা দিনের পর দিন কাজ করে চলেছে এই নিরীহ প্রাণীগুলোর জন্য।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2021/11/1-min-2021-11-22T093526.070.jpg)
তারিখটা ছিল গত ১৫ নভেম্বর। বন্য প্রাণী সুরক্ষা ও সংরক্ষণে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে থাকা এই সংস্থা, মৌলভীবাজার জেলার ৫ নং আখাইলকুরা ইউনিয়নের জগতপুর থেকে উদ্ধার করে একটি মেছো বিড়াল। যাকে বলা হয়ে থাকে বাঘরোলও। বনবিভাগের সাহায্য ছাড়া এ উদ্ধার কাজ ছিল অসম্ভব। উদ্ধার শেষে এই দল স্থানীয় মানুষের সাথে জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে গ্রামে গ্রামে। উদ্ধার অভিযানে রেঞ্জ কর্মকর্তা মৌলভীবাজার সদর জনাব গোলাম সরোয়ার ছিলেন মুখ্য ভূমকায়। উদ্ধার শেষে প্রাণীটিকে লাউয়াছড়া ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারে বন বিভাগের নিবিড় পর্যবেক্ষণে নিরাপদে রেখে আসা হয়।
![](https://dailynewsreel.in/wp-content/uploads/2021/11/2-min-2021-11-22T093526.237.jpg)
এই বাঘরোল সাধারণত নদীর ধারে, পাহাড়ি এলাকা এবং জলাভূমিতে বাস করে। সাঁতারে পারদর্শী হওয়ায় এ ধরনের পরিবেশে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। এদের গায়ে ছোপ ছোপ চিহ্ন থাকার জন্য অনেকে এদের চিতাবাঘ বলেও ভুল করে। এতে বাড়ে আরও বিপত্তি। এরা নিরীহ মাছখেকো। মানুষের ওপর আক্রমণ করে না এরা। চিতাবাঘ ভেবে অনেক জায়গায় পিটিয়ে মারা হয় এদের। পশ্চিমবঙ্গে এটিকে রাজ্যের ‘জাতীয় প্রাণী’ তকমা দেওয়া হয়েছে। এই রাজ্য বর্তমানে বাঘরোল সংরক্ষণে ও তাদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আশার আলো দেখিয়েছে।
নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আমরা এই বন্য প্রাণদের থেকে তাদের খাবার, আশ্রয় কেড়ে নিয়ে নিজেদের সম্পত্তি সুরক্ষিত করেছি। যারা পৃথিবীর উপর রাজত্ব করছে তাদের ওপর এই নগণ্যরা আঘাত হানার স্পর্দ্ধা দেখিয়েছে। তার শাস্তি পিটিয়ে খুন বা বিষ দিয়ে মারা। এরা যত মরেছে মানুষের উল্লাস বেড়েছে তত বেশি। হালে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে এসেছে এই অবলা প্রাণীদের সুরক্ষার ভার নিতে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে তারা একাগ্র। প্রশাসনের তরফেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এদের সুরক্ষার খাতিরে। সব শেষে দাবি একটাই। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিরাপদে থাকুক পৃথিবীর সকল বন্য প্রাণ।
Discussion about this post