আচ্ছা ভেবে দেখুন তো! জীবনে একবার হলেও আপনি,আমি এবং আর পাঁচটা সাধারন মানুষ একবার নিশ্চয়ই মৌমাছির কামড় খেয়েছেন। উফ! কী নিদারুণ সেই যন্ত্রনা! মৌমাছি হুল ফোটালেই সেই স্থান ফুলে বালিশ হতে ৫ মিনিটও লাগে না। বিপিন সেনের সাথে কম বেশী সবাই পরিচিত। ভারতীয় এই ব্যক্তি পুরো দেহ মৌমাছি দিয়ে আবৃত করে গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিলেন কিছু বছর আগে। ২০০৯ সালে তিনি পুরো শরীরে ৬ লাখ ১৩ হাজার মৌমাছিকে জায়গা দিয়েছিলেন। তার ওজন হয়েছিল ১৩৬ পাউন্ড।
আজ আপনাদের আর একজনের সাথে পরিচয় করাবো যিনি এই একই কর্মকান্ড করে রেকর্ড গড়েছেন। তিনি ভারতীয় নন, তিনি হলেন চীনের একজন মৌমাছি পালনকারী। ভদ্রলোকের নাম হল পিং। তার বর্তমান বয়স ৪১ বছর, যদিও তিনি রেকর্ড গড়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সে। তিনি চিনের মেগা-শহর চংকিংয়ের বাসিন্দা। চীন বিশ্বের অন্যতম প্রধান মধু উৎপাদক স্থান গুলির মধ্যে একটি। প্রতারক চক্রের কারণে যারা মধু শিল্পের সাথে যুক্ত অর্থনৈতিকভাবে তারা পিছিয়ে পড়ছেন। পিং নগ্ন শরীরে মধু মেখে দাঁড়িয়ে থাকেন। মধুর আকর্ষণে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি তার শরীরে বসে মধু খেতে থাকে।
এভাবেই জাদুকরী স্টান্ট দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মধু বিক্রি করে আসছেন। তবে কেন এমন অদ্ভুত ও ঝুঁকিপূর্ণ খেলায় মেতে উঠেছেন পিং? তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তার বয়স যখন ১২ বছর তখন থেকে তিনি এই কাজটি করে আসছেন। এটি তিনি করে থাকেন মানুষদের আসল মধু চেনাবার জন্য। কারণ মৌমাছি নকল মধুতে মুখ দেয় না। এই স্টান্টটি করার সময় পিং একেবারেই শ্বাসবন্ধ করে থাকেন। তিনি আরো বলেন যে একটি দুটি করে মৌমাছি শরীরে নিতে নিতে তার আর এখন সমস্যা হয় না।
প্রতিবার ১৫ মিনিট নিঃশ্বাস বন্ধ করে মৌমাছিদের শরীরে নেন পিং। এই পদ্ধতিতে একটি রাণী মৌমাছিকে ছোট একটি খাঁচায় নিয়ে দেহের সঙ্গে ঝুলিয়ে নেন পিং। এর মাধ্যমে অন্য মৌমাছিদের আকৃষ্ট করা হয়। কীভাবে তার শরীরে এতো মৌমাছি বসে তার জবাবে পিং বলেন, তার জন্য শরীর কে আগে থেকে প্রস্তুত করতে হয়। তিনি কোনো সাবান ব্যাবহার করেন না। এ কারণে মৌমাছিরা তার শরীরে আকর্ষণবোধ করে। তবে একটুর জন্য পিংয়ের চেষ্টাটি বিশ্ব রেকর্ডের চেয়ে কম। তবে অর্ধনগ্ন শরীরে স্টান্ট করার ক্ষেত্রে তিনি রেকর্ড গড়েছেন বলে দাবি করেন পিং। তার শরীরে বসেছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার মৌমাছি এবং মোট ওজন গিয়ে দাঁড়ায় ১০০ পাউন্ডে।
কলমে কণীণিকা ঘোষ
Discussion about this post