শুরু হয়ে গিয়েছে ভ্যালেনটাইন উইক। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমের সম্পর্ককে এক নতুন রূপে পাওয়ার সময়। চকোলেট, টেডি, প্রপোজের পর এবার প্রতিশ্রুতি অর্থাৎ প্রমিজ ডে। প্রেমিক-প্রেমিকাদের এবার একে অপরের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার পালা। কিন্তু প্রতিশ্রুতি কি শুধুই এক প্রেমিক ও প্রেমিকার একান্ত অন্তরঙ্গতার বিষয়? না, তা একেবারেই নয়। এই প্রেমের মরশুমে চলুন তবে এক অন্য ধাঁচের ভালবাসার প্রতিশ্রুতির গল্প করা যাক।
আজকের দিনে দেশজুড়ে চলছে লাভ জিহাদের দুঃস্বপ্ন। ভিন্ন ধর্মের প্রেমের উপর আসছে নানা আইনি ও বেআইনি বাধা। ধর্মের দোহাইতে খুন করা হচ্ছে তিলে তিলে গড়ে ওঠা ভালোবাসার সম্পর্কগুলোকে। অনেক সময় ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে গোঁড়ামির বিষ। ভালোবাসা কি সত্যি কোনো পাঁচিল অথবা চোখ রাঙানি মানে? তাই ভিন্নজাতি বা ভিন্ন ধর্মের সেইসব দম্পতিদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে এক গোষ্ঠী। নাম ‘ধনক’ অর্থাৎ রামধনু। যে গোষ্ঠী ধর্মের হাজার রঙকে অস্বীকার করে ভালোবাসার একটাই রঙ মেখেছে।
‘ধনক’-এর কর্ণধার আসিফ ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী রাণু কুলশ্রেষ্ঠা। ধর্মমতে তাঁরাও ছিলেন ভিনধর্মী। তবুও ধর্মের বিভেদ দেওয়াল ভেঙেই একে অপরের হাত ধরেছেন সারাজীবনের জন্য। প্রতিবেশীরা সেদিন ধর্মের ঝান্ডা তুলে বাধা দিলেও, নিজেদের লড়াইটা নিজেরাই লড়েছিলেন। তাই আজ তাঁরা পথে নেমেছেন ভিনধর্মী দম্পতিদের সাম্প্রদায়িকতার বিষ রক্ষা করে এক সুন্দর ভালোবাসার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে দিতে। ২০০৪- ‘০৫ থেকেই এই প্রতিজ্ঞায় ব্রতী আসিফ ও তাঁর স্ত্রী।
শুধু পুঁথিগতভাবে শিক্ষিত হয়ে চাকরি পাওয়াকে এই গোষ্ঠী শিক্ষার মাপকাঠিতে রাখেই না। তাই সমাজ দেশ গড়ার জন্য প্রকৃত শিক্ষার সাথে আলাপ করাতেও ধনক গোষ্ঠী এগিয়েছে। আজ প্রায় ৫০০০ বেশি দম্পতিদের সুরক্ষার সাথে নতুন জীবন দিয়েছেন তাঁরা। কোপ পড়েছে নানা আইনি বাধার। কিন্তু থামেনি ধনক। আজ ধনকের ভরসায় সাহস আসে ধর্মভেদ উপেক্ষা করেই ভালোবাসার মানুষের হাতটা ধরার। তাই আজকের প্রমিজ ডে’তে ধনকের সমাজ তথা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেখায় এক অন্য আকাশের স্বপ্ন।
Discussion about this post