২০২০ সালের সবচেয়ে নিরাপদ পুজো ! টু ডি স্ক্রিনে থ্রি ডি দুগ্গা দর্শন! হ্যাঁ, একদমই তাই! করোনা আবহে বিপর্যস্ত জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ার প্রতীক্ষায় রয়েছি আমরা সকলেই। কিন্তু সমস্ত বাধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতার মধ্যেও বাঙালির প্রিয় দুর্গোৎসব পালন করা নিয়ে চিন্তাভাবনা ছিল বেশ অনেকটা। ইতিমধ্যেই সব কিছুকে অগ্রাহ্য করে নিজস্ব সৃজনশীলতাকে পুঁজি করে তৈরি হল বিশ্বের প্রথম ভার্চুয়াল ত্রিমাত্রিক দুর্গাপ্রতিমা ও পুজো মন্ডপ! তিনি হলেন রোদ চশমা পেজের প্রতিষ্ঠাতা তীর্থ নারায়ণ ভট্টাচার্য্য। ‘ডেইলি নিউজ রিল’কে তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গা পুজো হওয়া নিয়ে সংশয় থাকার কারণেই তাঁর এই উদ্যোগ।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই মন্ডপ ও প্রতিমা তৈরী করতে তাঁর সময় লেগেছে প্রায় মাস চারেক। এই থ্রি ডি মডেল তৈরী করার তাঁর উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের বোধগম্য ৩৬০° মনোস্কোপিক ভিআর দর্শনকে সম্ভব করে তোলা। যদিও থ্রি ডি মডেলিংয়ের জন্য খুব উন্নতমানের যন্ত্র তাঁর কাছে ছিল না। লোগো ডিজাইন থেকে কাজ শুরু করে শিল্পী এই প্রথম এ ধরনের প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করেছেন।
২০১৫ সাল থেকে ফিল্ম তৈরীর কাজ শুরু করার পর ক্লাসিক্যাল অ্যানিমেশন এবং পাপেট অ্যানিমেশনে বিশেষ আগ্রহ দেখালেও থ্রি ডি গ্রাফিক্যাল অ্যানিমেশনকে আর ভিএফএক্সকে সময়োপযোগী প্রযুক্তি মনে করেছেন। তিনি জানান, ব্লেন্ডার ফাউন্ডেশনের ফ্রি সফটওয়্যার তাঁর কাজের ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করেছে। ২০১২ সালে শিল্পজগতে পা রাখার পর থেকেই থিম পুজো করার প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন তীর্থ। ২০১৭ সালে পেশাদার হিসেবে প্রথম ট্যাংরা ঘোলপাড়া পুজো কমিটির দুর্গাপুজোর থিমে সহকারী শিল্পী হিসেবে কাজের সুযোগ পান। প্রথাগত শিক্ষার অনুসারী নন শিল্পী, বরং স্বয়ং জ্ঞানার্জনে বিশ্বাসী।
ভার্চুয়াল ত্রিমাত্রিক দুর্গা প্রতিমা ও পুজো মন্ডপের মাধ্যমে তিনি বহু মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন এবং পরবর্তীকালে আরও ভালো কাজ নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে অনেকেই এই ভিআর প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নন। তাই ধোঁয়াশা কাটানোর জন্য খুব শীঘ্রই লাইভে আসবেন শিল্পী তীর্থ নারায়ণ বাবু ও আয়োজক কুণাল বিশ্বাস। পরবর্তী কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন, ভিএফএক্স এবং অ্যানিমেশন সম্পর্কিত ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজ করার কথা ভাবছেন। তীর্থ বাবুর কথায়, “আমি আমার বন্ধু তথা আয়োজক কুণাল বিশ্বাস এবং রোদ চশমা পেজের প্রোমোশনাল টিমকে ধন্যবাদ জানাই। তবে ঈশিতা গোলদারের আঁকা প্রচ্ছদ চিত্রগুলি আমার কাজের প্রচারে বিশেষ ইন্ধন যুগিয়েছে!”
প্রতিবেদক – জ্যোতি রাণী নাথ
Discussion about this post