আবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠল ঝড়৷ সৌজন্যে সাড়ে চার মিনিটে ছোট্ট একটি ভিডিও। এবার প্রশ্ন উঠতেই পারে ঠিক কি ছিল এই ভিডিওটিতে? যার কারণে চারদিকে এত তুলকালাম! আসলে ভিডিওটি আমাদের সমাজের এক প্রতিচ্ছবি। একটু অন্যরকম ভাবে। এই সমাজে নারীদের চরিত্র ঠিক যেভাবে বিচার করা হয়, সেইভাবে যদি একটি পুরুষেরও চরিত্র বিচার হত? তাহলে? হ্যাঁ, ভিডিওটির বিষয়বস্তু এটাই।
ব্যাঙ্গাত্বক ভাবে বানানো এই ভিডিও বানিয়েছেন অভিনেত্রী রায়তী ভট্টাচার্য্য। এই বিংশ শতকে দাঁড়িয়েও পোশাক বা রাত্রি বেলা বাড়ির বাইরে থাকা, এই বিষয়গুলির ওপর নির্ভর করে নারীদের চরিত্র বিচার করে এই পিতৃতান্ত্রিক সমাজ। ভিডিওটির মাধ্যমে রায়তী তাই অত্যন্ত ব্যাঙ্গ করেই সমাজের সেই নগ্ন রূপ তুলে ধরেছেন। তবে একটু অন্যভাবেই। পুরুষকে নারীর জায়গায় রেখে পুরো ভিডিওটি সাজান তিনি। একজন পুরুষ রাত্রি বেলা বাড়ির বাইরে থাকা কোনও মহিলাকে দেখলে ঠিক কি আচরণ করে বা বলে সেটাই উল্টো করে তুলে ধরেছেন তিনি।
গত পরশু রাতে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা মাত্রই মূহুর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। কমেন্টে তার সৃজনশীলতার প্রশংসাও করেন বহু নেটিজেন। তবে এই মধ্যেই ফুলের ভেতর কাঁটার মতই আসতে থাকে কিছু অশ্লীল ‘নেগেটিভ’ কমেন্টও। রায়তীর নিজের চরিত্র বিচার করে তাকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণও করতে শুরু করেন বহু মানুষ। ভিডিওটির আসল উদ্দ্যেশ্য বুঝতে না পেরে তাকে গালাগালিও করে বেশ কিছু জন। তাদের কথায়, এই সমাজে একজন মেয়েকে নাকি ‘মেয়েদের’ মতই থাকতে হবে। শালীনতা বজায় রেখে চলার দায় একমাত্র মেয়েদেরই। নিজেকে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির হাত থেকে বাঁচাতে নিজেকেই ‘ভদ্র’ ভাবে বাস করতে হবে এই সমাজে।
সবে অবশ্য বিন্দুমাত্র বিচলিত নন রায়তী। তিনি জানেন তার বক্তব্য কতটা সঠিক এবং বেশিরভাগ মানুষ তার তারিফও করেছেন। তবে এত কিছুর পরও একটা প্রশ্ন কিন্তু রেখেই গেল রায়তীর ভিডিও ও তার কিছু কমেন্ট। আদৌ ঠিক কবে ‘শিক্ষিত’ হবে এই সমাজ? নারীকে একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে কবেই বা তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেবে? পোশাক দিয়ে চরিত্র না বিচার করে কবে নিজের যোগ্যতা দিয়ে পরিচিত হবে একজন নারী? প্রশ্ন অজস্র। তবে এর উত্তর এখনও অজানা।
Discussion about this post