সময় কাটাতে রেস্তোরাঁ যাবার চল সব জায়গায় কম বেশি রয়েছে। তবে ঠিক কতটা সময় কাটানো হয়? ‘কিছুক্ষণ’? লেখক কায়েস আহমেদই এই দোকানটির নামকরণ করেন ‘কিছুক্ষণ রেস্তোরাঁ’। সুস্বাদু খাবারের জন্য তো বটেই তার সাথে এর নামই আলাদা আকর্ষণ মানুষের কাছে। এ দোকান বাংলাদেশের বিখ্যাত এক দোকান বলা যায়।
এখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত খাবার হলো স্যুপ কাটলেট। তবে আরও খাবার রয়েছে তালিকায় চিকেন ফ্রাই, চপ ইত্যাদি। বাংলাদেশের পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার সতীশ সরকার রোডের লেন ধরে যদি আসেন তবে একদম সোজা গিয়ে পড়বে সবুজ প্রকোষ্ঠের একটি ঘর। তার উপর বড় সাইনবোর্ডে লালরঙে লেখা ‘কিছুক্ষণ রেস্তোরাঁ’। যদিও এ সাইনবোর্ডে ঠিকানা লেখা ‘কেশব ব্যানার্জী লেন’, তবে এ জায়গা ‘কিছুক্ষণ রেস্তোরাঁ’ নামেই বিশেষ পরিচিত।
দোকানের ভেতরে ১৫-১৬ জন বসার মত জায়গা। আর ঢুকেই দেখবেন বিখ্যাত কিছু মানুষের ছবি। উত্তম কুমার, কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত প্রায় সকলেরই ছবি দেওয়ালে পর পর টাঙানো রয়েছে। এ দোকানের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ ছিলেন শিল্পের ভীষণ অনুরাগী। তাঁর ছোঁয়াতেই দোকানের এই সুন্দর রূপ বলা চলে। তাঁর অবর্তমানে তাঁর ছেলে স্বপন চন্দ্র ঘোষ ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ থেকে সুকান্ত ভট্টাচার্য্য, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, হাসন রাজা, জয়নুল আবেদীন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, লালন শাহ্, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাদার টেরেসা, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর মতো মহান ব্যক্তিদের ছবি রেস্তোরাঁর তিন দেয়াল জুড়ে সাজিয়ে রেখেছেন।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, ছোট গল্পকার কায়েস আহমেদ, সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর এখানে নিয়মিত আসতেন। সকাল ৭-১০টা এবং বিকেল ৫-১০টা রোজ খোলা থাকে এই দোকান। বিকেলের পর থেকে জমিয়ে ভিড় হয় দোকানে। ১৯৭৯ সালে প্রথম বাবুর্চি ছিলেন বিমল ডি’কস্তা। তাঁরই স্যুপের রেসিপি চলে আসছে এখনও। এ স্যুপের বিশেষত্ব হলো এক বাটি স্যুপে আস্ত কাঁচা ডিম দেওয়া হয় সাথে মুরগির মাংসের কিমা। যার দাম মাত্র ৪০টাকা। এছাড়াও চিকেন ফ্রাই ৬০ টাকা, চিকেন কাটলেট ২০ টাকা, ডিমচপ ১০ টাকা আর মোগলাই পরোটা মাত্র ৪০ টাকা এবং ৫০ টাকা।
Discussion about this post