কালীর মত মেয়ে বাড়ির বউ! এটা অনেকেই মানতে নারাজ। তবে যদি স্বয়ং মা কালী হন বাড়ির বউ সেটা কেমন হয়? নদিয়ার কালীগঞ্জের বুড়োমার পুজো বলে সেই গল্প। দেবী নিজে পুজো পান বাড়ির বউ রূপে। গোটা অমাবস্যা তিথি জুড়ে পুজো চলে এ বাড়ির। আসলে এ পুজো ভট্টাচার্য বাড়ির। তবে আনন্দ সবার।
এ পুজোর নিয়মে ব্যতিক্রম রয়েছে বেশ কিছু। বাড়ির পুরুষরা উপোস করে পুজো দেন এ বাড়িতে। অন্যদিকে শচীদেবীর কাহিনীকে মাথায় রেখে পরিবারের বৌ বা মেয়েরা দেবীর ভোগ রান্না করেন। পুজোয় পৌরহিত্য ছাড়া দেওয়া যায় না অঞ্জলি। নতুন বৌ রান্না করে পরিবেশন করে ভোগ। এটাই এ বাড়ির রেওয়াজ।
তবে এক অদ্ভুত ঘটনা শোনা যায় ভোগ পরিবেশন নিয়ে। নতুন বৌ ভোগ দেওয়ার সময়ে আচমকা তার ঘোমটা খুলে যায়। এদিকে দু হাত জোড়া কাজে। হঠাৎ অন্য দু হাত এসে ঠিক করে দিল ঘোমটা। এ ঘটনার সাক্ষী নিমন্ত্রিতরা। যথারীতি সবাই অবাক। এ বাড়ির সদস্য রাজারাম স্বপ্নাদেশ পান মা কালী তার স্ত্রী হয়ে আসবেন। সেই থেকেই এ পুজোর সূচনা। তার স্বপ্ন অনুযায়ী মায়ের মূর্তি। বিজয়া দশমীর দিন থেকে কালীমূর্তির কাঠামো তৈরি দিয়ে সূচনা হয় কালীপুজোর।
দূরের জেলা থেকেও মানুষ আসে এ বাড়ির পুজোয়। হিসেব বলছে পুজোর বয়স ৩৫০ বছর। নিয়ম বদলে গিয়েছে কিছু। আগে এ বাড়িতে ছাগ বলির প্রথা ছিল। ক্রমে তা বন্ধ হয়েছে। পুজোর সময়ে বুড়ো মা’কে ঘিরে বসে মেলা। আনন্দ যেন দ্বিগুণ হয়ে ওঠে।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – পল্লব শেঠ
Discussion about this post