আমাদের জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব প্রায় অনেকটাই। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের পারিপার্শ্বিক ব্যাপারে জানতে এবং ‘আপডেটেড’ থাকতে সাহায্য করে। তবে যদি ভাবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হওয়া প্রত্যেকটি তথ্যই একদম সঠিক, তাহলে কিন্তু বেশ বড় ভুল করবেন। বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত ছড়ানো তথ্যগুলি। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রমাণিত হয় সেই তথ্যগুলি ভুল এবং অবান্তর। এই রকম ভাবে তথ্যগুলিকে নেটিজেনরা একটি বিশেষ নামেও ডাকছেন আজকাল। তাঁদের মতে, ভুল তথ্যগুলি ‘হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি’র মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে!
অতি সম্প্রতি আমাদের সকলেরই হোয়াটসঅ্যাপে ঘোরাঘুরি করছে একটি তথ্য। বেশিরভাগ মানুষ তা পড়েছেন এবং বলা বাহুল্য বিশ্বাসও করে নিয়েছেন। তথ্যটির বক্তব্য অনেকটা এইরকম যে, ১৯৪৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানে বোমা নিক্ষেপ করে। ফলে তছনছ হয়ে গিয়েছিল হিরোসিমা ও নাগাসাকি শহর দুটি। তাই যুক্তরাষ্ট্রের উপর প্রতিশোধে জাপানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকৃত একটি ছুঁচও নাকি বিক্রি হয় না। এটি যে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কারণে তা কিন্তু নয়। বরং একতা ও দেশপ্রেমের কারণে জাপান আমেরিকাকে বয়কট করেছে, ইত্যাদি। আমাদের সংবাদ মাধ্যম পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখার পর এই সিদ্ধান্তে এসেছে, এই বক্তব্য পুরোটাই মিথ্যা। তথ্যটি সম্পূর্ণই ভুলে ভরা।
সঠিক তথ্য হল, আমেরিকা এবং জাপানের মধ্যে রীতিমত বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক রয়েছে। আমেরিকান জাত বিভিন্ন বস্তুর জাপানে চাহিদা প্রায় আকাশ ছোঁয়াই বলা চলে। জাপানে বিক্রিত বিভিন্ন চকলেট থেকে শুরু করে নানা রকমের নরম পানীয়, সবেতেই প্রায় আমেরিকানদের নাম। ডান্ডেলিয়ন চকলেট (Dandelion Chocolate), লিউলিউলমন (lululemon) এবং বক্স চার্ম (Box Charm), শেষ কয়েক বছরে এই তিনটেরই বেশ বড় রকমের ব্যবসা হয়েছে জাপানে। আমেরিকান নরম পানীয় কোকা-কোলার সবথেকে বেশি ফ্লেভার একমাত্র জাপানেই পাওয়া যায়। এই কারণে জাপানকে আমেরিকান ব্র্যান্ডের সঞ্জীবনী সুধা হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। শুধু জাপানের মাধ্যমেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাৎসরিক প্রায় ১২১ বিলিয়ন ডলার আয় করে। তাই হোয়াটসঅ্যাপ মারফত পাওয়া যে কোনও তথ্যই যাচাই করবেন, তথ্যটি সঠিক কি না। নাহলে ভুল তথ্য ছড়ানোর দায়ে আপনার কপালে জুটতে পারে হাজতবাসও। কে বলতে পারে!
Discussion about this post