রোজ সকালে চায়ের স্বাদে ঘুম কাটে আপামর বাঙালির। তবে এ স্বাদের বদলে সকাল সকাল যদি জিভে ঠেকে পাটের চায়ের স্বাদ, তাহলে কেমন হয়? কী ভাবছেন, পাটের আবার চা! এ আবার হয় নাকি? টালিগঞ্জের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এমনই এক পানীয় তৈরি করে ফেলেছে ইতিমধ্যে। যা সম্পূর্ণভাবে তৈরি পাট থেকে। এ জিনিস দেখতে একেবারে গ্রিন টি’র মতোই।
এর মধ্যেই তিনটি সংস্থার সঙ্গে চলছে প্রস্তুতি এবং তার বিপণনের চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পেটেন্টের জন্য করা হয়েছে আবেদন। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই বাজারে আসতে চলেছে পাট পাতার চা। মূলত এ কাজের উদ্যোক্তারা হলেন টালিগঞ্জ আইসার নিনফেটের বিজ্ঞানী মহল। পাট পাতা থেকে কীভাবে পানীয় তৈরি হতে পারে এই তাদের মূল কাজ।
এ কাজে যথেষ্ট রকম সফলতা মিলেছে বলা চলে। পাট পাতার বিভিন্ন প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন হয়ে তবেই তৈরী হয়েছে পানীয়টি। প্রথমে ক্ষেত থেকে তোলা হয় পাট পাতা। পাট গাছ লাগানোর ৪০ দিনের মাথায় প্রথম পাতা তোলা হয়। এ পদ্ধতির নাম লিভার হারভেস্টিং। এরপর চলে অর্গানিক ওয়াশ অর্থাৎ জল দিয়ে পাতা পরিষ্কার করা হয়। তারপর জল ঝরিয়ে পাতা শুকনো করতে লেগে যায় প্রায় দুদিন। এবার তাপমাত্রায় দিয়ে তাকে ওভেনড্রাই করতে হয়। এইরকম পাট পাতাকে প্রায় এক বছর সংরক্ষণ করা যায়। তারপর একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হিট ট্রিটমেন্ট করা হয় পাতার। এবার তাকে গুঁড়ো করে প্যাকেজিং করে চলে মার্কেটিং। টি ব্যাগের সিস্টেমেই জলে ডুবিয়ে নিলেই তা পানের জন্য প্রস্তুত।
পাট পাতায় পাওয়া যায় বিভিন্ন রকম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। চায়ের মত উত্তেজক প্রায় নেই বললেই চলে। তাই এই পানীয় বেশ উপকারী হবে বলেই আশা করা যায়। অন্যদিকে পাট দেশের অর্থকারী ফসল। সেদিক থেকে অর্থনৈতিক সুবিধার আশাও রাখা খুব ভুল কিছু নয়। শুধুমাত্র এই আবিষ্কারের ক্ষেত্রেই ৫০০ কেজি পাট পাতা সংগ্রহ করা হয়েছে প্রতি হেক্টর জমি থেকে। অন্যদিকে বিজ্ঞানীরা দেখছেন পাটের এই পানীয়র আরও উন্নতি ঘটানো যায় কিনা।
Discussion about this post