গত কয়েক বছরে বাংলার স্ট্রিট ফুড-মানচিত্রে এক বিশেষ বদল ঘটেছে। ফুচকা, রোল, চাউমিন এগুলির পাশাপাশি জায়গা দখল করেছে মোমোও। খোলামেলা স্ট্রিট মোমো জয়েন্টের পাশেই গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ব্র্যান্ডেড মোমোর স্বাদও পেয়েছে তিলোত্তমার মানুষ। এর মধ্যেই বিশেষ কয়েকটি ব্র্যান্ড গত কয়েকবছরে কলকাতা তথা পুরো ভারতে রকেট গতিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। ওয়াও মোমো তার মধ্যে অন্যতম। যেখানে ব্র্যান্ডের ট্যাগলাইন “You will never go hungry when wow! branch is nearby!” সেখানে চিন্তাটা আর কোথায়? খিদের মুখে স্বাদ বদলে এই ব্র্যান্ডের মোমো চেখে দেখেন নি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়াই মুশকিল! ভারতের সবচেয়ে বেশি দ্রুতগামী, লাভজনক ক্যুইক সার্ভিস রেস্টুরেন্টের মধ্যে প্রধান সদস্য ‘ওয়াও মোমো’। দিল্লি, মুম্বই, কোচি, চেন্নাই, ভুবনেশ্বর; ভারতের প্রায় সব জায়গাতেই এর দেখা পেয়েই যাবেন।
তবে এর শুরুটা অবশ্যই কলকাতাতে। প্রায় এক রূপকথার গল্পের মতই। ২০০৮ সালে টালিগঞ্জের গাছতলা এলাকায় স্পিংডেল স্পেন্সার্সের ৬/৬ মাপের একটা ছোট্ট ঘর থেকে শুরুটা হয়। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্সের দুই প্রাক্তন সাগর দারিয়ানী এবং বিনোদ হোমগাইয়ের হাত ধরে এখান থেকেই শুরু স্বপ্নের উড়ান। প্রথম মাস থেকেই সেই ব্যবসায় মেলে দারুণ সাড়া। এরপর ২০১০ সালে কলকাতার বৃহত্তম ফ্যাশন হাব ‘বিগ বাজার’-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ‘ওয়াও মোমো’। ইতিমধ্যেই তারা খুলে ফেলে নিজেদের দশম আউটলেট। আর দুই বন্ধুকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১১ অর্থাৎ ঠিক পরের বছরেই ‘ওয়াও মোমো’র ঠিকানা হয় কলকাতার বাইরে বেঙ্গালুরুতে ( ফিনিক্স মার্কেট সিটি মল)। ঠিক একই ভাবে ২০১২ সালে ফিনিক্স সিটি মল, পুনে এবং ২০১৩ সালে ফিনিক্স মার্কেট সিটি মল, চেন্নাইতে নিজেদের নতুন ঠিকানা বানায় ‘ওয়াও মোমো’।
বিপুল জনপ্রিয়তার সঙ্গে আউটলেটের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। ২০১৪ সালে ৩৩ টি আউটলেটের সঙ্গে বার্ষিক ১০০ মিলিয়ন ডলারের টার্ন ওভারে পৌঁছায় এই ব্যবসা। এরপর ২০১৭ সালে বেঙ্গালুরু, মুম্বই, ভুবনেশ্বরে নিজেদের ১০০ তম আউটলেট খোলে। এরপর আবার কলকাতায় ফিরে আসে ‘ওয়াও’। পার্ক স্ট্রীটে ১৫০ তম আউটলেটের পাশাপাশি নিজেদের নতুন সাব ব্র্যান্ড ‘Wok Is Wow’ খোলে তারা। দু’বছর আগে ২০১৮ সালে ‘ওয়াও’ চালু করে নিজেদেরই ইনহাউস পানীয় ‘Thunderzz’! ‘ফ্যাব ইন্ডিয়ার’ ম্যানেজিং ডিরেক্টর উইলিয়াম বিসেল এই ব্যবসায় ৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পাশাপাশি উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসাবেও যোগদান করেন । শুধুমাত্র স্টিমড মোমোই নয়! বেকড মোমো, তন্দুরি মোমো, মোমো বার্গার, চকলেট মোমো, কী নেই ‘ওয়াও’-এর মেনুর লিস্টিতে! আর রয়েছে বিশেষ ম্যাঙ্গো মোমো, যাতে একসঙ্গে মোমো এবং আমের স্বাদ পাওয়া যাবে! এমনকি থাকছে বাঙালির প্রিয় পোস্তও,অবশ্যই মোমোর মোড়কে। তবে আর দেরি কিসের! চটপট চলে যান নিকটবর্তী কোনও ‘ওয়াও’ আউটলেটে। নানা কিসিমের মোমো হয়তো সেখানে আপনার জন্যই অপেক্ষারত!
Discussion about this post