বর্তমানে সকলেরই ব্যস্ত জীবন। সবাই দৌড়ে বেড়ায় শর্ট কাট খুঁজতে। তাই যে কোনো কাজ যতো তাড়াতাড়ি হয় ততোই ভালো। আর রোজকার কাজের মধ্যে বাজার করা বেশ ঝক্কির। কিন্তু এই কাজটুকু যদি করা যায় সময়ে বেঁধে! তাহলে কেমন হয়? চিন্তা নেই আপনাকে সময়ের হিসেব করতে হবে না। সে হিসেব আগে থেকেই ছকে রেখেছে বাজার নিজেই।
ঘুম ভাঙার পর রওনা দিতে হবে এক ঘণ্টার বাজারে। তাহলেই কেল্লা ফতে! মন ভরে বাজার করে আনতে পারেন। তবে সময় মাত্র এক ঘন্টা। ব্যতিক্রমী এই বাজারটি বসে কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে। ইসলামাবাদ ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামের পাশেই পোকখালী ইউনিয়নের সীমানা। দুই ইউনিয়নের সীমানার মাঝে ঈদগাঁও টু গোমাতলী সড়কের টেকপাড়া পয়েন্টে ‘ডান্ডি বাজার’ নামে মফঃস্বল বাজার অবস্থিত। সেখানেই রয়েছে কিছু মুদি দোকান। আর দোকানের পাশেই সারি দিয়ে প্রতি ভোরে বসে বাজার। এক ঘণ্টার বাজার। বিভিন্ন প্রজাতির তরতাজা সামুদ্রিক মাছের জন্য বাজারটি বিখ্যাত।
সামুদ্রিক মাছ তো আছেই। তার সাথে কিছু দূরেই বাগদা চিংড়ি চাষের ঘের। চিংড়ির পাশাপাশি উৎপাদন করা হয় নোনা জলের আরো নানান প্রজাতির মাছ। সেখানে কোরাল, বাঠা, দাতিনা, নোনা পানির ট্যাংরা, বিছাতারা, ধুম, কেঁচকি ও বাইলা মাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও লইল্যা, চাগা ও বাগদা চিংড়িসহ আরো হরেক প্রজাতির চিংড়ি মাছ পাওয়া যায় এ বাজারে। নানান প্রজাতির সমস্ত মাছে যেন সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে বাজার। ভোররাতে ঘের থেকে তুলে আনা হয় মাছ। তারপর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাজারে তোলা হয় এসব তাজা মাছ। আর যথারীতি বাজারের ওই টুকু সময়ে সব মাছ বিক্রিও হয়ে যায়।
শুধু মাছই নয় এখানে পাওয়া যায় সামুদ্রিক কাঁকড়াও। এ যেন ক্রেতাদের বাজারে টানার আরেক আকর্ষণ। তাছাড়াও এখানে দেশী মুরগী, বিনি চাউল, ঘরোয়াভাবে উৎপাদিত তাজা শাক-সবজি আর তরকারির পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। আর এভাবে প্রতিদিন কাকডাকা ভোরেই জমে উঠে বেচাকেনা। তবে শেষ কথা কিন্তু একটাই, ওই এক ঘণ্টা। স্থানীয় ক্রেতারা ছাড়াও দূর প্রান্ত থেকে আসেন অনেকেই। থলে ভরতি করে বাজার নিয়ে যান তারা। এই এক ঘণ্টার বাজার বেশ জমজমাট। কিন্তু দেরি হলে ক্রেতা নেই বিক্রেতাও নেই! সুতরাং এক ঘণ্টার বাজার নামটা যথার্থ। আর ভোরের বাজার অলসতাও কমায় সাথে ভালো রাখে স্বাস্থ্যও।
Discussion about this post