আজ্ঞে হ্যাঁ, কলকাতায় ঈদের ফসল এই খাবারটিকে বললে মোটেই বাড়াবাড়ি হবে না। আফগানিস্তানে জন্ম নেওয়া বাকরখানির আঁতুড়ঘর কলকাতায় ঠিক কোথায়? সেটাই আজ বরং জানা যাক।
জাকারিয়া স্ট্রিটের বাকরখানি বিশেষ প্রসিদ্ধ। কিন্তু এই খাবার আর অন্য কোথাও নেই। যাই হোক, এই বাকরখানি প্রথম শোনা গিয়েছিল প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গানে। “আলু বেচো, ছোলা বেচো, বেচো বাকরখানি/ বেচো না বেচো না বন্ধু তোমার চোখের মণি।” কিন্তু এই রুটির সঙ্গে এক মর্মস্পর্শী প্রেমকাহিনী রয়েছে। শোনা যায়, মুর্শিদকুলী খাঁর দত্তক পুত্র আগা বকের ভালোবাসতেন নর্তকী খনি বেগমকে।ওদিকে উজিরের পুত্র জয়নালেরও ভালোবাসার মানুষ ছিলেন তিনি। যদিও তা একতরফা। শেষ পর্যন্ত জয়নাল আগা বকরকে হত্যা করতে গেলে তার নিজের বাবার হাতে মৃত্যু ঘটে তার। তবে মৃত্যুর আগে তার তরবারির আঘাতে মারা যান খনি বেগম। এই প্রেমকে মনে রেখে এক বিশেষ রুটি তাকে উৎসর্গ করেন আগা বকর। নাম দেন বকরখনি, যা লোকমুখে হয়ে ওঠে বাকরখানি।
বাকরখানি সাধারণত গম, দুধ, লবণ, চিনি, ডালডা, ঘি, পনীর এবং খামির দিয়ে তৈরি করা হয়। রুটিটি প্রথমে বেলন দিয়ে কিছুটা চ্যাপ্টা ও প্রসারিত করা হয়। তারপর ঘি, গুড়, জাফরান, পোস্ত বা নিগেল্লার বীজ ইত্যাদি দিয়ে তাওয়া বা তন্দুরে সেঁকে নেয়া হয়। এই খাবার ঢাকায় খুব প্রচলিত। ঈদে কলকাতায় এটি মেলে নানা আকারে, নানা স্বাদে। জাকারিয়া স্ট্রিটে তাসকিন হোটেলে বাকরখানি আর শিরমল পাওয়া যায়। দাম ২০ টাকা ও ৬০ টাকা। তবে আমাদের কলকাতার বুকে হেন পার্বণ নেই যার বিশেষ খাবার পাওয়া যায় না। কারণ সব পার্বণেই উৎসবের মেজাজে ধরা দেয় কলকাতা।
চিত্র এবং তথ্য ঋণ – সোমা মুখোপাধ্যায়
Discussion about this post