আচ্ছা! মনে পড়ে প্রায় ১৬-১৭ বছর আগেকার কথা? পুরুলিয়ার একটি আঞ্চলিক সিনেমার গান ‘বাঁচাও সাধুবাবা’ কী অদ্ভুতরকম জনপ্রিয় হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম-মফ:স্বল থেকে বেশ কিছু শহরাঞ্চলে! তখন তো সিডি-ক্যাসেটের যুগ। তার দৌলতে লোকের মুখে মুখে ঘুরছে সেই গান। ওদিকে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের ক্ষুদু রায় ও কালী রায়। দুই ভাই। দুজনেই পেশাগতভাবে মিষ্টি বিক্রেতা। জিয়াগঞ্জেই তাদের পাশাপাশি দোকান। তারা বাজারে আনলেন নতুন মিষ্টি। সাধুবাবা গানের তালে তালে তাঁরাও মিষ্টির নাম দিলেন ‘সাধুবাবা’! সাধুবাবার আশীর্বাদে জিয়াগঞ্জের বাজারে তখন এই মিষ্টির একচেটিয়া আধিপত্য। এক কথায় কুর্নিশ দুই ভাইয়ের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিকে। উপস্থিত বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে জনপ্রিয় হয়ে গেল এই নবাগত মিষ্টি! ক্রেতারাও তাই কৌতূহলী চোখে পা বাড়ায় সাধুবাবার সাম্রাজ্যে।
তবে সাধুবাবার স্বাদ অসন্তুষ্ট করেনি তার ভক্তগণকে। দিন যত গিয়েছে, আশেপাশের দোকানেও স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে সাধুবাবার আসন। তবে কেমন দেখতে সেই সাধুবাবা? গোলাকার, সামান্য চ্যাপটা উপরে খোয়া ক্ষীরের আবরণ। আর মিষ্টির ব্যাসার্ধের সমান দৈর্ঘ্যের ক্ষীরের চাকতি। সাধুবাবার বহিরাঙ্গণ শুকনো মনে হলেও বাস্তবে ইনি রসালো। তবে চটচটে নন। সাদা রঙের সাধুবাবার সাথে চমচমের অনেকাংশেই মিল। তবে এ লম্বাটে নয়। আর স্বাদের পার্থক্যও বোঝা যায় সহজে।
দাম প্রতি মিষ্টি পিছু ১০-১২ টাকা। তবে আক্ষেপ একটি বিষয়েই। এই সাধুবাবা নিজের এলাকার বাইরে এখনো সেভাবে পা বাড়াননি। অনেকেই জিয়াগঞ্জের সাধুবাবা বললে কল্পনা করতে বসে গেরুয়া পরিধেয় কমন্ডলু হাতে কোনো যোগী মানুষের রূপ। ভ্রম ভাঙ্গে এই মিষ্টির সাথে পরিচয় ঘটলে। এখন সাধুবাবা কবে জিয়াগঞ্জ ছেড়ে বহির্ভ্রমণে বেরোবেন সেই অপেক্ষাতেই বসে বাকি বাংলা। জয় সাধুবাবার জয়!
তথ্য এবং চিত্র ঋণ – অর্পিতা ব্যানার্জী
Discussion about this post