প্রাচীন মন্দির, ঐতিহ্য কথাগুলো বড্ডো পরিচিত। তবে বিভিন্ন জায়গার ঐতিহ্য বিভিন্নভাবে যেন সংরক্ষিত আছে। ঠিক তেমনি বর্তমান বাংলাদেশের নাটোরে আজও বেঁচে রয়েছে এক প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মন্দির। যে মন্দিরের বয়স হিসেব করলে দাঁড়ায় প্রায় ৫৩৩ বছর। মা কালীর এই মন্দিরে প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ৩৩ ফুট।
পাঁচ শতাধিক বছর আগে চলছিল নবাবী আমল। ঠিক সেই সময়ে বর্গীদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে বহরমপুর থেকে ৬০ ঘর বণিক চলে আসে লালপুরের বুধপাড়ায়। এই বণিকদল বুধপাড়া অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। এই কাঁসা শিল্পীরাই কালী পুজোর জন্য খড়ের চালা সমেত একটি মন্দির নির্মাণ করে। এরপর ১৩৩২ সালে জনৈক লাল কেনেডিয়ার স্ত্রী জানকি বাঈয়ের অনুদানে মন্দির চত্বর পাকা হয়।
প্রতি বছর কার্তিক মাসে এখানে কালীপুজো হয়। আর সেই পুজোকে ঘিরে মেলা বসে। উৎসবের আয়োজনে মেতে ওঠে মানুষজন। নাটোরের জমিদার পূণ্য চন্দ্র দাস মন্দিরের নামে প্রায় দেড়শো বিঘা জমি দান করেছিলেন। শোনা যায়, এ মন্দিরে পুজোর সময়ে পাঁঠা বলি হয়ে থাকে। দেবীকে তুষ্ট রাখতেই মানুষের এরূপ আয়োজন।
তবে এ মন্দিরকে ঘিরে একটা জল্পনা আছে। ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকই এই মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিল। অদ্ভুত বিষয় হল, পাক বাহিনী এদিকে হামলা করতে এলেই পথ ভুলে যেতো। বলা যায় পথ হারিয়ে ফেলতো বারবার। মনোবাসনা পূরণের কারণে বহু মানুষ এ মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। দেবীর মহিমা সত্যিই বিরাজমান বলেই মনে করেন তারা। আর তাই বোধহয় এত বছর ধরে আপন মহিমায় শিরদাঁড়া টান করে দাঁড়িয়ে আছে, নাটোরের এই মন্দির।
চিত্র এবং তথ্য ঋণ – মহম্মদ সাইফুল ইসলাম
Discussion about this post