চলল পুরোহিতের মন্ত্র পাঠ। মানা হল বিয়ের সমস্ত নিয়ম কানুন। নাচের তালে মহা আড়ম্বরে সম্পন্ন হলো বিয়ে। ছিল নিমন্ত্রিতদের জন্য ভোজের আয়োজনও। এত পর্যন্ত শুনতে এই অনুষ্ঠান অন্যান্য সাধারণ বিয়ের মতো মনে হলেও, এই বিবাহ অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণের বিষয় ছিল পাত্র ও পাত্রী। কারণ বিয়েটি দুটি মানুষের ছিল না, ছিল দুটি পোষ্য কুকুরের।
ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের মোতিহারির মাজুরাহ গ্রামে। এই গ্রামেই বাস করেন মাঝ বয়সী নরেশ সাহানি। নরেশ সাহানির পোষা দুই কুকুর কাল্লু ও বসন্তী। কুকুর দুটি যখন একদম ছোট তখন থেকেই নিজের হাতে তাদের বড় করেছেন তিনি। যেভাবে একজন মানুষ তার ছেলে-মেয়েকে বড়ো করে তোলে ঠিক তেমনভাবেই তিনি বড়ো করে তুলেছেন কাল্লু আর বাসন্তিকে। ফলে ছেলে-মেয়ে বড়ো হওয়ায়, স্বাভাবিক নিয়মেই অভিভাবকের কর্তব্য মেনে কাল্লু আর বাসন্তির বিয়ের বন্দোবস্ত করেন নরেশ বাবু।
কাল্লু-বাসন্তির বিয়ের জাঁকজমক ছিল চোখ ধাঁধানো। সন্তানসম দুজনের বিয়ে দিতে কোনও রকম কার্পণ্য করেননি নরেশ বাবু। বর আর কনেকে নতুন জামা পরিয়ে সাজিয়ে বিয়ের মন্ডপে আনা হয়। গানবাজনা থেকে খাবারের আয়োজনের পাশাপাশি ছিল ঢালাও মদের ব্যবস্থাও। নরেশ বাবুর কথায়, “হিন্দু রীতি অনুসারেই কাল্লু আর বাসন্তির বিয়ে হয়েছে। মানা হয়েছে সমস্ত নিয়ম কানুনও।”
কুকুরের বিয়ে দিতে আসা পুরোহিত ধর্মেন্দ্রকুমার পাণ্ডে জানান, “কুকুর ভৈরবের রূপ। তাই এই ধরনের বিয়ে দিলে মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। ধুয়েমুছে যায় পাপও।” অভিনব এই বিয়ে দেখতে মাজুরাহ গ্রামের বাসিন্দাদের পাশাপাশি এসেছিলেন গ্রামের বাইরের লোকজনও। বিবাহের এই অনুষ্ঠানে ভোজের আয়োজন ছিল জমজমাট। পাত পেড়ে প্রায় ৪০০ জনকে খাওয়ানো হয় বিয়ের ভুরিভোজ। যাওয়ার সময় নবদম্পতিকে আশীর্বাদও করে যান তাঁরা।
Discussion about this post