দিন দিন রাজ্য জুড়ে যেভাবে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে তাতে নাজেহাল অবস্থা রাজ্যবাসীর। তাই গরমের ছুটিতে কয়েক দিনের জন্য পাহাড়ে ঘুরে আসলে মন্দ হয় না। আর কাছাকাছির মধ্যে বেড়াতে যাওয়ার জন্য মনোরম জায়গা হতে পারে উত্তরবঙ্গ। কিন্তু কথা হল উত্তরবঙ্গের কোথায় বেড়াতে যাবেন? আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী হন এবং প্রকৃতিকে ভালোবাসেন তাহলে ঘুরে আসতে পারেন ইয়েলবং থেকে। একদম প্রকৃতির মধ্যে পাহাড়ের কোলে কেভিং, ক্লাইম্বিং, র্যাপলিং, জিপ-লাইনিং ইত্যাদি অ্যাডভেঞ্চার করার সুযোগ রয়েছে এখানে।
কালিম্পং জেলার একটি ছোটো গ্রাম ইয়েলবং। উত্তরবঙ্গের অন্যতম অফবিট ডেস্টিনেশন এটি। এই গ্রামের আসল আকর্ষণ হল এখানকার নদী গিরিখাত। এই নদীখাতটি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ জায়গা জুড়ে অবস্থিত। দু’ধারে বড় বড় পাথর, তার মাঝ বরাবর বয়ে গিয়েছে পাহাড়ি নদী রমতি। খরস্রোতা পাহাড়ি নদী রমতির বুকে যখন এসে পড়বেন ছড়ানো পাথর, ভেজা বালিতে প্রজাপতির ঝাঁক, স্বচ্ছ শীতল জল আপনার সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দেবে। নদীখাতের সঙ্গে এখানে একটি গুহাও রয়েছে। তবে এই পথে পাড়ি দিতে আপনাকে ট্রেকিং করে যেতে হবে। এই ট্রেকিংয়ের পথে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আপনার মন ভরিয়ে তুলবে।
ক্যানিয়ন বা নদীখাত ছাড়াও এখানে অনেক অজানা জলপ্রপাত রয়েছে। আপনি চাইলে ইয়েলবং থেকে রেনবো জলপ্রপাত ও থ্রি স্টেপ জলপ্রপাত ঘুরে আসতে পারেন। জলপ্রপাতের ওপর রামধনু, এক অদ্ভুত কম্বিনেশন যা দেখে চোখ জুড়াতে বাধ্য। পাহাড়, নদী, জঙ্গল – সব মিলিয়ে লুকানো রত্ন ইয়েলবং। এখানে থাকার জন্য কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে। তাছাড়া আপনি তাঁবুতেও রাত্রিযাপন করতে পারেন।
ইয়েলবং ভ্রমণের সেরা সময় হল গ্রীষ্মকাল। কারণ নদীখাতের ভিতরে নদীর জলের তাপমাত্রা কম থাকে ফলে গরমকালে এটা বেশ আরামদায়ক হবে। এবার জেনে নেওয়া যাক আপনি এখানে পৌঁছাবেন কিভাবে? ট্রেনে করে প্রথমে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন আসতে হবে। তারপর সেখান থেকে ইয়েলবং যাওয়ার গাড়ি পেয়ে যাবেন। এনজেপি থেকে এর দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। এছাড়াও শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন এই গ্রামে। নিউ মাল জংশনে নেমেও গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যায় এখানে।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – সামিমুল হক
Discussion about this post