হেঁসেলে রোজ ১০০ কেজির ভাত আর ৭০ কেজির আলু রান্না। আর তার সম্পূর্ণটাই হয় একটিমাত্র সংসারে। ভাবছেন নিশ্চয়ই এ আবার কোন রাক্ষুসে পরিবার রে বাবা। না না, চমকাবেন না শুধু ধৈর্য্য ধরুন। এমন এক বিস্ফোরক খবর দিতে চলেছি যে মুখটি আপনার এবার হাঁ হবেই।
বাংলাদেশ লাগোয়া মিজোরামের এক গ্রাম। মধ্যবিত্ত পরিবারেই জন্ম হয় জিওনা চানার। যাঁর এখন বয়স ওই ৭৫ এর আশপাশ। কিন্তু তাঁর সন্তানসন্ততির সংখ্যা গুনে গুনে ৯৪ টি, স্ত্রী সংখ্যা ৩৯, নাতিনাতনি ওই জনা ৩৩ এবং ১৪ পুত্রবধূ নিয়ে মোট ১৮১ জনের সংসার। যদিও চলতি বছরের ১৩ জুন মারা যান জিওনা। তাই এখন পরিবারের সদস্য সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১৮০ জনে। আর এই বৃহৎ মাপের সংসার ইতিমধ্যেই বিশ্ব রেকর্ডের খাতাতেও নাম তুলে ফেলেছে। প্রথম বিয়েটা যখন করেন তখন জিওনা ১৭ বছরের কিশোর। আর তারপর থেকে এক এক করে ৩৯ এ পৌঁছেছেন। একবছরে ১০ টি বিয়ের রেকর্ডও কিন্তু তাঁরই পকেটে। ১০০টি ঘর রয়েছে তাঁর বাড়িটিতে। যার বিয়ের দিন যত আগে তার ঘরটিও জিওনের ঘর থেকে ততটাই দূরে। সেই হিসেবে জিওনের প্রথমার ঘরটি অনেকটা দূরে। সে তুলনায় কনিষ্ঠা স্ত্রীয়ের ঘর জিওনের ঘরের লাগোয়াই। জিওনা তাঁর এই বিশাল আকারের সংসারের কর্তা হতে পেরে কিন্তু বেশ গদগদ। এই পরিবারটিকে আরও বড় করার ইচ্ছেও রয়েছে তাঁর।
এই রসিক ব্যাপারের মধ্যে আশ্চর্যের ব্যাপার কি জানেন! এতমানুষ কিন্তু একসাথে এক বাড়িতেই সুখে শান্তিতে দিন যাপন করেন। পুরুষ ও মহিলার আলাদা ঘর থাকলেও রান্নাটি হয় এক আঁচেই। তাই ১০০ কেজির চাল আর ৭০ কেজির আলুর রান্না তো স্বাভাবিক ব্যাপার। আর বিশেষ দিনে মাংসের কড়াইতে চাপে ৪০ টিরও বেশি মুরগি। খাওয়ারের জায়গাটি দেখলেও মনে হবে যেন কোনো হোস্টেলের ডাইনিং রুম। ওদের জীবিকা বলতে পুরুষরা করেন কাঠের কাজ আর মহিলারা চাষবাস ও পশুর প্রতিপালন। এসবে দিব্যি এতগুলো পেট চলে যায়। জিওনা তাঁর পরিবারের ছানাপোনাদের জন্য একটি স্কুলও তৈরী করেছেন। স্কুলের জন্য সরকারি অনুদানও পান মাঝেমধ্যে। জিওনার পরিবারটি কিন্তু এই দশকের এক দৃষ্টান্তই বলা যায়। যেযুগে মানুষের মধ্যে হিংসা ঈর্ষার পাল্লাটাই ভারী সেযুগে এমন মিলমিশের যৌথ সংসার কিন্তু বেশ অন্যরকম অনুভূতি জাগায়।
Discussion about this post