আমাদের চারপাশে আজকাল চোখ ফেরালে দেখা যায় সর্বত্রই লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। আধুনিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে এখন ধ্বংস হয়ে চলেছে পরিবেশ-প্রকৃতির সমস্ত অণুপ্রাণ। নির্বিচারে গাছ কাটা, অরণ্য ধ্বংস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের লাগামহীন চাহিদা পূরণের খেসারতে আজ সংকটের মুখে জীববৈচিত্র্যও। ক্রমশঃ এক সর্বনাশা পতনের দিকে এগিয়ে চলেছে বন্যপ্রাণ। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ওয়াইন্ডলাইফ ফান্ডের (WWF) একটি গবেষণায় উঠে এল এমনই কিছু তথ্য।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত সংস্থা ‘WWF’-র এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, গত ৫০ বছরে পৃথিবীতে প্রায় ৭০% হ্রাস পেয়েছে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা। সৌজন্যে আধুনিক মানব জাতি এবং পরিবেশ সুরক্ষায় তাদের উদাসীনতা। প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার এবং নির্বিচারে বন সাফ করার কারণেই বন্য প্রাণীগুলি আজ ধ্বংসের পথে। এই ভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই আরও হ্রাস পেতে চলেছে বন্যপ্রাণ, এমনটাই আশঙ্কা গবেষকরা।
‘WWF’-র প্রধান নির্বাহী কর্তা তানিয়া স্টিলি জানিয়েছেন, “আমরা নিজেদের যে বাসস্থান সেই পৃথিবীকেই ধ্বংস করে চলেছি। বিশ্বে আমাদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং বেঁচে থাকা আজ ঝুঁকির মুখে। নষ্ট হচ্ছে বন্যজীবন। ফলে ভারসাম্য হারাচ্ছে জীববৈচিত্র্যও। আমাদের সাহায্যের জন্য প্রকৃতি অপেক্ষা করে রয়েছে। হাতে সময় কিন্তু বেশি নেই।” ১৯৭০ সালের পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্তন্যপায়ী, উভচর, মাছ এবং সরীসৃপের প্রায় ২০,০০০ প্রজাতিই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। জীববৈচিত্র্যের ইতিহাসে যা এক রেকর্ড। মানব জাতি যদি এখনও সতর্ক না হয় তাহলে অচিরেই এক বিরাট ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে তারা।
তাহলে কী দাঁড়াল? হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় কিন্তু আর নেই! পরিবেশ-প্রাণ রক্ষায় এবার পথে নামতে হবে আমাদেরই। এখনও যদি না এগিয়ে আসি, তাহলে আর কবে?
Discussion about this post