রহস্য পেলেই বাঙালি হৃদয় নেচে ওঠে। আর সেই রহস্য যদি হয় মহানায়িকাকে নিয়ে, তাহলে তো উত্তেজনার শেষ নেই। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। কথা হচ্ছে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনকে নিয়ে। পাবনার মেয়ে রমা স্টুডিও পাড়ায় সুচিত্রা। সে সময়ে এইরকম অদম্য সাহস করে অভিনয় জগতে নিজের জায়গা পাকা করে নেওয়া মোটেই সহজ ছিল না। আর তা তিনি করেছেন অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে। অভিনয়ের পর শেষের ৩৬টা বছর নিজেকে লুকিয়ে রাখা সোজা কথা নয়। বলা যায় এও একপ্রকার সাধনা। তবে বয়স কালের যে রূপ তিনি লুকিয়ে রাখলেন, পর্দায় আসার সময়ে সে রূপের খেয়াল রাখতেন কে?
বিদেশি মেকআপের ব্যবহার তখনও এতটা শুরু হয়নি। শোনা যায়, নিজের মেকআপ নিজেই করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন অভিনেত্রী। অন্য কারো করে দেওয়া মেকআপ তার বিশেষ পছন্দ হতো না। তবে বাকি মেকআপ আর্টিস্টদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ ছিলো, এমনটা নয়। তবে তাঁর বিশ্বাস ছিলো বশির মিঞার ওপরে। বশির মিঞা বাড়িতে বানানো জিনিস দিয়েই তৈরি করে আনতেন ম্যাডামের মেকআপ। মেকআপের বিষয়ে সুচিত্রা দেবী বেশ খুঁতখুঁতে ছিলেন। মেকআপ পছন্দ না হলে ফ্লোরে আসতেন না তিনি। তবে বশির মিঞার তুলির টানে তিনি হয়ে উঠতেন অনন্যা। যদিও তার ডান গালের সেই বিখ্যাত তিল, তিনি নিজেই এঁকে নিতেন নিপুণ হাতে। যে তিল তখনকার যুবকদের বুকে মুহূর্তে ঝড় তুলে দিত।
রঙিন দুনিয়ার সাদা কালো পর্দায় চোখ, ঠোঁট ফুটিয়ে তোলা ছিলো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য কাজ। তবে মহানায়িকা তো তিনি এমনি নন। আদর্শ লুক নিয়ে দর্শকের মন জয় করার পদ্ধতি তিনি অচিরেই জেনেছিলেন। মডার্ন লুকে সাজতে পছন্দ করতেন মিসেস সেন। সময়ের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে ছিলেন তিনি। সশরীরে তিনি আজ না থাকলেও তার মোহময়ী চাহনি আর চিরযুবতী লুকেই তিনি রয়ে গিয়েছেন আপামর বাঙালির মনে।
Discussion about this post