ব্রিটেনের সারের বাসিন্দা ডেভিড ল্যাটিমার বৈজ্ঞানিক হলেও তাঁর নেশা বাগান-পরিচর্যা। তিনি ১৯৬০ সালে একটি বড় আকারের গোল কাঁচের বোতলে খানিক মাটি এবং সার রাখেন। তারপর তারের সাহায্যে চারটি স্পাইডার ওর্টের চারটি বীজ লাগানো হয় সেই বোতলে। একটি গাছ টিকে থাকে। তবে একেবারে শুরুতেই বোতলের গাছটিকে সিল করে দেওয়া হয় নি। একযুগ পরিচর্যার পর ১৯৭২ সালে বোতলটিকে স্থায়ীভাবে সিল করে দেওয়া হয়। গত ৪৮ বছর এটি বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
নাহ, এরপরেও গাছটি বেঁচে রয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে এই বোতলের ভিতরে গড়ে উঠেছে একটি বাস্তুসংস্থান, যা নিজেই নিজেকে রক্ষা করে চলেছে দীর্ঘ সময় ধরে। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই বোতলে বাইরে থেকে কোনও কিছুর আদান-প্রদান হয় না। গাছটি অক্সিজেন উৎপন্ন করে এবং মাটির মধ্যেই অবস্থিত হিউমাস থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে। গাছের ঝরে যাওয়া পাতা ও অন্যান্য অংশ মাটিতে পড়ে ব্যাক্টেরিয়ার সাহায্যে ফের সরল উপাদানে পরিণত হয়। ফলে জৈব বস্তু ভেঙে গিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইডও বায়ুতে আসে। প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মাটিতে জমা হয় এবং শিকড় দিয়ে আবার গাছ তা শোষণ করে। ফলে একটি স্বতন্ত্র জলচক্রও তৈরি হয়। গাছের প্রয়োজনীয় যাবতীয় উপাদান গাছটি মাটি থেকেই নিয়ে ফেলতে পারে। তাই মিরাকেল ঘটিয়ে চার যুগ ধরে জল কিংবা বাতাস ছাড়াই দাপটের সঙ্গে নিজের অস্তিত্ব বজায় রেখেছে সে।
চিত্র ঋণ – ডেইলি মেল
Discussion about this post