মানুষ পারেনা এমন কোনো কাজই বোধহয় নেই। ভালো খারাপ দুই ঠিক থেকেই এই কথাটি প্রযোজ্য। আজকে এমন এক ঘটনা বলবো যা জানলে আপনি শিউরে উঠবেন। যাকে নিয়ে বলবো তার নাম হলো কার্ল ডেনকে। কেন নৃশংসতার প্রসঙ্গে তার নাম নিচ্ছি সেটা বলার আগে জানা দরকার কে তিনি? কী তার পরিচয়?
ডেনেকের জন্ম ১৮৬০ সালের ১১ ফেব্রয়ারি এক জার্মান কৃষক পরিবারে। তার ছোটবেলা সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া যায় তা থেকে বোঝা যায় সে ছিল শান্ত প্রকৃতির। পরবর্তীকালে তার পিতার মৃত্যুর পর সে কিছু টাকা দিয়ে এক খণ্ড জমি কিনে চাষবাসের চেষ্টা করেন। কিন্তু সে কাজে ব্যার্থ হলে জমি বিক্রি করে একটি বাড়ি কেনেন। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির কারণে সেটিও তাকে বিক্রি করতে হয়। এই বাড়ির পাশে তিনি একটা কসাইখানা চালাতেন। এছাড়া তিনি স্থানীয় লুথেরান চার্চে সেচ্ছাসেবক হিসাবেও কাজ করতেন। এতটা পড়ার পর নিশ্চই আপনাদের মনে হচ্ছে এই নিতান্ত সাধারণভাবে জীবন কাটানোর একটা মানুষের সঙ্গে নৃশংসতার কী সম্পর্ক থাকতে পারে? আলবাৎ রয়েছে সম্পর্ক!
এই আপাত নিরীহ শান্ত হিসাবে পরিচিত মানুষটার অন্য একটা পরিচয়ও আছে। ‘দি ক্যানিবার অফ জাইবিসে’। ক্যানিবালিজম বলতে মানুষের মাংস খাওয়াকে বোঝায়। যারা এই নৃশংস কাজটা করে থাকে তাদের বলা হয় ক্যানিবাল। এবার নিশ্চয়ই কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন কেন নৃশংসতার প্রসঙ্গে আপাত ‘শান্ত’ কার্ল ডেকের নাম নিচ্ছি। এবার আসি সেই প্রসঙ্গে যে কেন কার্ল তার অপর নামটি পেয়েছিলন। কার্ল হটাতই দরিদ্র গৃহহীন মানুষদের হত্যা করা শুরু করেন। সেই মাংসই তুলে দিতেন কসাইখানায় আসা ক্রেতাদের হাতে। মনে করা হয়ে সরাইখানা ভালো করে চলতেই তিনি এই পন্থা নেন।
ইডা লাউনার এর সাথে কার্লের পরিচয় ১৯০৩ সালে। তিনিই কার্ল এর প্রথম শিকার বলে মনে করা হয়। এর ৬ বছর পরে ২৫ বছর বয়সী এমা স্যান্ডারসনকে তিনি হত্যা করেন। তার সর্বশেষ পরিচিত শিকার হলেন রচাস পাভলিক। জানা যায় ডেনাকে একটি খাতা রেখেছিলন। যেখানে তিনি নাকি তার খুনের রেকর্ড রাখতেন! তবে অপরাধ কখনোই চাপা থাকেনা। ডেনাকেরও থাকেনি। ১৯৪২ সালের ২০ ডিসেম্বর অলিভার নামে অপর এক গৃহহীনকে যখন সে হত্যা করতে যায় তখন সে কোনক্রমে পালিয়ে বাঁচে। পরে পুলিশ ডেনেককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে এইসব ভয়ঙ্কর তথ্য সবার সামনে আসে। তবে তাকে বন্দী করার দুদিনের মধ্যেই সে আত্মহত্যা করে।
ডেনেকের খাতার রেকর্ড অনুযায়ী তার মানব শিকারের সংখ্যা ছিল ৩১, তদন্ত কিন্তু অন্য কথা বলে। তার বাড়ি থেকে পাওয়া অত্যাধিক পরিমাণের হাড় ও অন্যান্য শরীরের অংশ থেকে অনুমান করা হয় তার হাতে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ছিল কমপক্ষে ৪২ বা তার বেশী! শুধুই কি বিক্রি বাড়ানোর জন্যই তিনি এই কাজ করতেন? নাকি জীবনের কিছু অসাফল্য তাকে ঠেলে দিয়েছিল কোনো মানসিক সমস্যার দিকে? সে তথ্য অবশ্য চাপা পড়ে যায় তার মৃত্যুর সাথেই।
Discussion about this post