“আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।” আর দু’টো মানুষকে বেঁধে রাখার জন্য গানের মাধ্যমের থেকে বড়ো মাধ্যম আর কী হতে পারে! তাতে নাই বা বুঝলাম গানের ভাষা। হয় তো গানই পারে দু’টো দেশের মানুষকেও বেঁধে বেঁধে রাখতে। সাম্প্রতি এমনই ঘটনার সাক্ষী রইলো নেটিজেনরা। পাকিস্তানি সিরিয়ালে শোনা গেল শুদ্ধ বাংলায় গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত।
“আমি বাংলায় গান গাই”। হ্যাঁ শুধু বাঙালি কেন এখন সুদূর পাকিস্তানের মানুষও গুনগুন করে হয়তো সুর মিলিয়ে উঠছে রবীন্দ্রসঙ্গীতে। হয় তো অনেকে বুঝতে পারছে না শব্দ গুলোর অর্থ কী! কিন্তু গান এমনই একটা মাধ্যম যেটায় সমস্ত ভাষা বোঝার উর্দ্ধে। শুধু সুর দিয়েও যাকে অনুভব করা যায়। আর সেটা যদি হয় বাঙালির গর্ব রবি ঠাকুরের গান তবে সেই গানের সুরে যেন থাকে অদ্ভুত মাধুর্য। দু’টো ভিন্ন ভাষার মানুষকেও যা বেঁধে দিতে পারে আত্মীয়তায়। কাঁটা তারের বেড়ায় তাই ফুল ফুটিয়েছে এই গানই। তবে বাহ্যিক সমস্যার বাইরে গিয়ে দু’দেশের মানুষেরা এর আগেও এমন ভালবাসার ছবির সাক্ষী রয়েছি বিভিন্ন সিনেমার মাধ্যমে। তবে এভাবে বাংলা ভাষার ব্যবহার আগে দেখা যায় নি।
মেহরিন জব্বর পরিচালিত পাকিস্তানি সিরিয়াল ‘দিল কায়া কারে’ যেন দু’টো দেশের মানুষকে আবার জুড়ে দিয়েছে মানসিক ভাবে। গানটি গেয়েছেন শর্বরী দেশপাণ্ডে। দৃশ্যে দেখা যায় একটি মেয়ে একটি সোফায় বসে গাইছে “আমারো পরান যাহা চায়”। মুগ্ধ হয়ে তাকে শুনছে ঘরের মধ্যে থাকা আরো তিন সমবয়সী ছেলে মেয়ে। আবার এই পুরো দৃশ্যটিকে মুঠোফোনের উজ্জ্বল স্ক্রিনে সেটাই মুগ্ধ হয়ে দেখছি আমরা।
সমস্ত কাঁটা তার ভেদ করে দু’টো দেশের মানুষকে “বেঁধে বেঁধে” রাখছে এই ভাষা। বাঙালি হিসাবে গর্ব বোধ করার জন্য এর থেকে বেশি আর কীই বা হতে পারে! রবি ঠাকুর শুধু একটা সম্প্রদায়ের কখনোই হতে পারেন না, উনি যে সারা বিশ্বের এও বারবার প্রমাণ হয়েছে। তাই হাজারো ‘বাংলাটা ঠিক আসেনা’-র মাঝে এই গুলো বাঙালিরদের কাছে এক বিশাল প্রাপ্তি।
Discussion about this post