আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। পর্যটন বা ভ্রমণকে উদ্দেশ্য করে প্রতি বছর ২৭ সেপ্টেম্বর পালিত হয় এই দিনটি। বাঙালিরা ভ্রমণপ্রিয় হবে না, একথা সত্যিই ভাবনারও অতীত। শত ব্যস্ততার মাঝেও একটু ফাঁক পেলেই যেকোনো জায়গায় গিয়ে হাওয়া পরিবর্তন করতে পারলেই একটু শান্তি। আর যারা সমতলবাসী, তারা আজীবনই একটু পাহাড়ঘেঁষা। একটা সময় ছিল যখন পাহাড় বলতেই মনে ভেসে উঠত দার্জিলিং – এর সেসব পরিচিত ছবি। তবে এখন মানুষের রুচি বদলেছে। এখন অফবিট প্রেমীদের ভিড় আর দেখা যায় না আমাদের শৈলশহরে। তাই এই বিশেষ দিনে সেইসব অফবিট প্রেমীদের জন্য রইল এক ভিন্ন স্বাদের ঠিকানা। পূর্ব হিমালয়ের কোলে মিরিকের খুব কাছেই অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খনি তাবাকোশি গ্রাম।
উত্তরবঙ্গে লুকিয়ে থাকা যেসব পাহাড়ি গ্রামগুলোকে পর্যটকদের ভিড়, কোলাহল এসব কিছুই ছুঁতে পারেনি, তাদের মধ্যে তাবাকোশি হল অন্যতম। মিরিক থেকে মাত্র সাত বা আট কিমি দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই গ্রাম। মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে রাংভাং খোলা। আমরা যাকে নদী বলি লেপচাদের ভাষায় তা হল খোলা। তার চারপাশে পাইন, বার্চের সমাহারে সে এক অপরূপ সৌন্দর্য। তবে জঙ্গল ছাড়াও যে দুটো জিনিসের থেকে চোখই ফেরানো দায় তা হল সবুজে মোড়া চা বাগান আর শীতের দিনে উপত্যকা জুড়ে কমলালেবুর বাগান। আরেকটি অন্যতম আকর্ষণ হল নানান রকমের পাখি। বলা যায়, পক্ষী প্রেমীদের স্বর্গরাজ্য এই তাবাকোশি। তবে দুদিন কাটাতে চাইলে ঘুরতে পারেন আরও বেশ কিছু জায়গা। যেমন জোড়পোখরি, লেপচাজগত, সিমনা ভিউ পয়েন্ট, পশুপতির মার্কেট, গোপালধারা চা বাগান, মিরিক লেক, মিরিক মনেস্ট্রি এবং আরও নানা জায়গা।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে তাবাকোশির দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। বাগডোগরা দিয়ে যেতে চাইলে সেই সুযোগও রয়েছে এখানে। বিমানবন্দর বা রেলস্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে সোজা পৌঁছে যেতে পারেন তাবাকোশি। এছাড়া শিলিগুড়ি দিয়ে শেয়ার গাড়িতেও যাওয়া সহজ। এখানে চা বাগানের সঙ্গেই রয়েছে একাধিক হোমস্টে। সাধারণত চা বাগানের মালিকরাই এই হোমস্টেগুলোর মালিক। এখানে থাকা, খাওয়া মিলিয়ে জনপ্রতি দিনে খরচ হতে পারে ১২০০-১৫০০ টাকা। সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল মাস অবধি এখানে আসার সেরা সময়। তাই কম খরচে মন ভরে দুদিন প্রকৃতির কোলে কাটাতে চাইলে বেড়িয়ে পড়ুন তাবাকোশির উদ্দেশ্যে।
Discussion about this post