দোল হল রঙের উৎসব। বসন্তের শুরুতে শীতের আড়ষ্টতা কাটিয়ে এদিন প্রকৃতি নবরূপে রঙিন হয়ে ওঠে। উৎসবের এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মেতে উঠি আমরা সকলেই।দোলযাত্রা উপলক্ষে সেই আনন্দে কিছু নতুনত্বের স্বাদ আনতেই, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় বেশ কিছু মেলারও। হুগলি জেলার সুগন্ধ্যার দোলের মেলা তার মধ্যে অন্যতম ও সুপ্রাচীন। হুগলি জেলার সদর শহর চুঁচুড়ার লাগোয়া সুগন্ধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দোলযাত্রা উপলক্ষ্যে প্রতি বছর বসে এক মেলা। হাতা-কড়া-খুন্তির মতো সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে বাচ্চাদের খেলনা কী নেই সেখানে। বিনোদন হিসাবে রোলার-কোস্টার, ব্রেক-ডান্স বা নাগরদোলার দেখাও মিলবে।
এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় এক সুপ্রাচীন কালাচাঁদ বা কৃষ্ণের মন্দিরকে কেন্দ্র করে। সুগন্ধ্যার বসু রায় পরিবারের আদি বিগ্রহ ছিল শ্রী নাড়ুগোপাল। পরবর্তীকালে বিভিন্ন কারণে তাঁদের পরিবার চার ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। তাঁরা তখন নিজস্ব বিগ্রহ স্থাপন করে দোল উৎসব পালন করতে থাকেন। এঁদের মধ্যেই কালাচাঁদ পরিবারের আর্থিক অবস্থার বিশাল উন্নতির ফলে তাঁদের জাঁকজমক বৃদ্ধি পায়। তাঁদের জমিদার বলেও আখ্যায়িত করা হয়। তাঁরাই এই দোল উৎসবটি শুরু করেন। তাই সুগন্ধ্যার দোল বলতে লোকে এখনও কালাচাঁদের দোলকেই বোঝেন। নাড়ুগোপাল ও কালাচাঁদের পাশাপাশি শ্রী রাধাবিজয় গোপাল এবং শ্রী রাধাগোপালের দোল উৎসবও এখানে পালিত হয়। পরবর্তীকালে দোল উৎসবের পাশাপাশি তিন দিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়। রাত বাড়লেই ভিড় জমতে থাকে মেলার দোকানে দোকানে। মেলার পাশাপাশি এই তিন দিন সারা রাত ধরে যাত্রার অনুষ্ঠানও চলে।
পথনির্দেশ – চুঁচুড়া স্টেশনে নেমে অটো বা বাসে চেপে ১০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায় সুগন্ধ্যা স্কুল মোড়ে। এখানেই গলির মধ্যে সুগন্ধ্যা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের মাঠ সংলগ্ন এলাকাতেই আয়োজিত হয় এই মেলা।
Discussion about this post