লাদাখে স্থানীয় মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার আন্দোলন ঘিরে সম্প্রতি অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে ২৬ সেপ্টেম্বর বিশিষ্ট পরিবেশকর্মী, শিক্ষাবিদ এবং আন্দোলনের অন্যতম নেতা সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার হলেন।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কেন্দ্র সরকার দেশকে স্বৈরাচারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গণআন্দোলনকে দমন করতে চাইছে। ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যে তিনি নাকি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনতাকে প্ররোচিত করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (NSA) প্রয়োগ করা হয়েছে, যার ফল দীর্ঘমেয়াদী আটক এবং জামিনের সুযোগ নেই।
সূত্রমতে, তাঁকে রাজস্থানের যোধপুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পাশাপাশি লেহ শহরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করার একদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর প্রতিষ্ঠিত অলাভজনক সংস্থা ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ’-এর বিদেশি অনুদান গ্রহণের লাইসেন্সও (FCRA) বাতিল করে দেয়। ২০১৮ সালে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত ওয়াংচুক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওয়াংচুক বলেছেন, তিনি এই আন্দোলনের জন্য যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে প্রস্তুত, এতে তাঁর কোনো দ্বিধা নেই।
ওয়াংচুক সতর্কবার্তার সুরে বলেন, “আমি সেই পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। জেলে থাকলেও এই সোনম ওয়াংচুক আরও বেশি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে সরকারের জন্য। কারণ এতে দেশের মানুষ আরও স্পষ্টভাবে বুঝবে, কীভাবে এই দেশ চালানো হচ্ছে।” লাদাখের রাজধানী লেহ-তে ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তি ও পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী বিক্ষোভে যোগ দেন। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন বিজেপি কার্যালয় ও একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানো হয়।১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ দিনের জন্য অনশনে বসেছিলেন ওয়াংচুক-সহ ‘লেহ অ্যাপেক্স বডি’-র সদস্যরা। বুধবারের হিংসার পরে তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশবাহিনী।
Discussion about this post