ভোটার তালিকার শুদ্ধিকরণের নামে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হতে চলেছে এক নজিরবিহীন প্রক্রিয়া, যার নাম SIR (Special Intensive Revision)। নির্বাচন কমিশনের ভাষায়, এটি “ভোটার তালিকার মহা-পরিষ্কার অভিযান।” ১ নভেম্বর থেকেই এই বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। এই উদ্যোগে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০২৫ সালের খসড়া তালিকা মিলিয়ে দেখা হবে কারা প্রকৃত ভোটার। যাঁদের নাম দুই তালিকায় মিলবে না, তাঁদের নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে দিতে হবে সরকারি নথি। যেমন জন্ম শংসাপত্র, পাসপোর্ট, ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের পুরনো নথি, জমির দলিল বা শিক্ষাগত প্রমাণপত্র। আধার কার্ড দেখানো গেলেও সেটি নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে না।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, মৃত, স্থানান্তরিত নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে অক্ষম ভোটারদের নাম বাদ পড়বে তালিকা থেকে। সূত্রের দাবি, অন্তত এক কোটি নাম মুছে যেতে পারে এই প্রক্রিয়ায়। প্রতিটি বুথে বুথ লেভেল অফিসার (BLO) ভোটারদের হাতে দেবেন এনুমারেশন ফর্ম, যা পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিসহ জমা দিতে হবে। ২০০২ সালের তালিকায় কারও বাবার বা মায়ের নাম থাকলে, সেই ভোটার প্রায় নিশ্চিতভাবে তালিকাভুক্ত হবেন। এই ‘ম্যাপিং’ প্রক্রিয়া আপাতত শুধু পশ্চিমবঙ্গেই চালু হচ্ছে। কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকাই হবে একমাত্র বৈধ তালিকা। যাঁরা এসআইআরে অংশ নেবেন না, তাঁরা ভোটাধিকার হারাতে পারেন।
প্রশাসনিক এই পদক্ষেপের পিছনে রাজনৈতিক তর্ক তুঙ্গে। কমিশন দাবি করছে, এটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং নিয়মিত তালিকা-সংশোধন।” কিন্তু বিরোধীরা এসআইআরের আড়ালে এনআরসির ছায়া দেখছেন। তাঁদের মতে এটি ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত। কেন্দ্রের দাবি, এটি কেবল তালিকা শুদ্ধিকরণের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এদিকে চায়ের দোকান থেকে অফিস-কাছারি পর্যন্ত এখন ঘুরছে একটাই প্রশ্ন, “আমার নাম থাকবে তো?” ভোটের আগে বাংলার রাজনীতিতে ফের ফিরে এসেছে ভয়, ফর্ম আর অনিশ্চয়তা।






































Discussion about this post