চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম শুরু হয়েছিল করোনা ভাইরাসের প্রভাব। তারপর থেকে সারা বিশ্বে মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রামক ভাইরাস। পৃথিবীর প্রায় ১২৩টি দেশে করোনার হানায় মৃত প্রায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি মানুষ। চীনের পাশাপাশিই রয়েছে হংকং, তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরের মত দেশগুলি। প্রতিবেশী সিঙ্গাপুরে প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য চিনা নাগরিকের যাওয়া আসা। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে দেশটি কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছে।
তাহলে কোন জাদুবলে সিঙ্গাপুর এই অসম্ভবকে সম্ভব করল? সামান্য পেছন ফিরে দেখতে হবে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝমাঝি সময়ে সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৮। সেই সংখ্যা এখন ২০০ ছাড়িয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ঘটেনি কোনও মৃত্যু। যে কোনো মহামারীর বিরুদ্ধে দেশকে রক্ষা করতে গেলে প্রথমেই দরকার এক সুস্থ ও সতেজ স্বাস্থ্য-পরিকাঠামো। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই ভাইরাসকে সঠিকভাবে সনাক্ত করে তারপর তাকে আলাদা করা। সাধারণ সতর্কবার্তা মেনে চলা ছাড়াও আরও বেশ কিছু ব্যাপারে কড়া নিদান দিয়েছে সেদেশের সরকার। কোন ব্যক্তির মৃদু সংক্রমণ হলে ঘরে বন্দী করে এবং বাড়াবাড়ি হলে হাসপাতালের বিশেষ আলাদা বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে। ব্যক্তিগত ভাবে প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীর নিরাপত্তার দায়িত্বও নিয়েছে সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন অ্যাপ, ওয়েবসাইটের সাহায্যে সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাদের প্রত্যেককে আলাদা করে সনাক্ত করে তাদের তথ্যও সংগ্রহে রাখা হচ্ছে। যারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করছেন, তাদের কড়া শাস্তিও ঘোষণা করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস খুবই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। এখনও অবধি এর কোনও প্রতিষেধক বা নির্দিষ্ট চিকিৎসার আবিষ্কারও করা সম্ভব হয়নি। এই মহামারী থেকে উদ্ধার পাওয়ার একমাত্র উপায় হল মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি। অসুস্থতার আগাম প্রস্তুতি ও অসুস্থতা পরবর্তী কার্যকরী সঠিক চিকিৎসা মাধ্যমেই এর থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে প্রয়োজন স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষার ব্যবস্থাও। সিঙ্গাপুর সরকার সেই শিক্ষাই দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।
তথ্য ঋণ – ডক্টর’স ডায়লগ
Discussion about this post