ফেসবুক, হোয়াটস্যাপের মতো অ্যাপগুলোয় রয়েছে স্বল্প চেনা কিংবা অচেনা মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ। তাই এসব ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট বয়স না হলে সবার চোখের আড়ালে ঘটতেই পারে অঘটন। তেমনই এক দুর্ঘটনা ঘটেছে কলকাতার নিউটাউনের সুলানগুড়ির দক্ষিনপাড়াতে। স্কুল পড়ুয়া একটি ছেলের হঠাৎ আত্মহত্যার খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সঙ্কেত মিস্ত্রি, বয়স ১৮।
ছেলেটির মা মায়া মিস্ত্রির বক্তব্য, প্রেমে আঘাত পেয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ সেই নাবালিকা তাঁর সন্তানকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা জুগিয়েছে। গত বছরের মে মাস থেকেই এলাকার এক নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক হয় ছেলেটির। বন্ধুত্ব থেকে ধীরে ধীরে প্রেম। কিন্তু তারপরই কী এমন ঘটল যে আত্মহত্যা? মায়া দেবীর কথায়, মেয়েটির একাধিক সম্পর্ক ছিল। আর সেই সব একাধিক সম্পর্কের কথাই বারবার সংকতের কাছে বলে তাকে উত্তেজিত করে চলত মেয়েটি। ছেলেটি দু’বার হাতও কেটেছে বলে জানান তাঁর মা। চোখের সামনে মায়াদেবীর একমাত্র ছেলে সঙ্কেত একটু একটু করে শেষ হতে থাকে। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও ফেরাতে পারেননি ছেলেকে। মায়াদেবী জানান চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ঘটনার একদিন আগে থেকে ছেলের সঙ্গে তুমুল বচসা হয় মেয়েটির। ঘটনার দিনও রাত ১২ টা থেকে ফোনে চলছিল কথা কাটাকাটি। সময় তখন রাত ২:১২। মেয়েটির ফোন আসে মায়াদেবীর কাছে। মেয়েটির কথা শুনেই ছুটে যান তিনি সঙ্কেতের ঘরে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। গলায় বেল্ট আঁটা, ঝুলছে দেহ। মুখ ফ্যাকাসে জিভ ঠেলে বেরিয়ে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি সংকেতকে। ভোরের দিকে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। ইতিমধ্যেই উদ্ধার হওয়া বেশ কিছু ভয়েস রেকর্ডিংয়ে নাবালিকার বয়ানে মিলেছে অসঙ্গতি, উঠছে সেই অভিযোগও।
ঘটনার পরদিনই নাবালিকা এবং তার মায়ের নামে এফআইআর দায়ের করেন মায়াদেবী। যদিও মেয়ে নাবালিকা হওয়ায় পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। কোনও সুইসাইড নোট না থাকায় মেয়েটিকে গ্রেফতারও করেনি। তবে মায়া দেবী চাইছেন নাবালিকা হলেও, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার যোগ্য শাস্তি পাক মেয়েটি। ঘটনাটির তদন্তকারী অফিসার আব্দুল হামিদ মোল্লা এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেন। অভিযুক্ত নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয় আমাদের তরফে। যান্ত্রিক গোলযোগের তাঁরাও এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন নি।
Discussion about this post