ফুটবল বা ক্রিকেট বিশ্বকাপ এলেই বুঁদ হয়ে পড়ে সারা বিশ্ব। এই কথা যতটা সত্যি, তার সঙ্গে এও সত্যি, যে এই ক্রিকেট বা ফুটবল বিশ্বকাপে পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশের প্রতিনিধিত্ব থাকে না। কিন্তু কোন খেলায় পৃথিবীর প্রতিটি দেশ খেলে? সারা পৃথিবীর খেলোয়াড়দের মিলন মেলা কোন ক্ষেত্রটি? অলিম্পিকস। প্রতি চার বছর অন্তর একটিই ছাতার তলায় হাজির হন বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন খেলোয়াড়। এবার প্যারিস অলিম্পিকের এই মিলন ক্ষেত্র আশ্রয় হয়ে দাঁড়ালো সেইসব খেলোয়াড়দের জন্যেও যাঁদের নেই কোন দেশ, নেই জাতীয় সঙ্গীত।
প্রাচীন গ্রিসে অলিম্পিকের গোড়াপত্তন হলেও, আধুনিক অলিম্পিক শুরু হয়েছিল ১৯০০ সালে। তাতে ছিল মোট ১৪ টি দেশের প্রতিনিধিত্ব। আজ এই প্রতিযোগিতা দাঁড়িয়েছে ২০৬ টি দেশের ১০ হাজার ৫০০ জন খেলোয়াড়দের মধ্যে। অংশ নিয়েছে প্যালেস্তাইন। ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে প্যারিসের রাস্তায় বিক্ষোভ হলেও অংশগ্রহণে বাধা আসেনি। এর মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বারের মত রয়েছেন শরণার্থী ক্রীড়াবিদরাও। যাঁদের নিজের দেশ থাকতেও নেই। এই রিফিউজি অলিম্পিক দলের মধ্যে ৩৭ জন খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছেন অলিম্পিকের ১২ টি খেলাতে।
পৃথিবীতে যুদ্ধের শেষ নেই। বেড়ে চলেছে শরণার্থী সমস্যা। কিন্তু খেলার জগতে সকলের একটাই পরিচয়। তাঁরা সকলেই খেলোয়াড়। সকলেই যোদ্ধা। ২০১৬ সালের রিও, ২০০০ সালের টোকিও অলিম্পিকের পর প্যারিসেও রয়েছে উদ্বাস্তু দল। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এই উদ্বাস্তু দলের স্বীকৃতি দিয়েছিল। উদ্বাস্তু দলের পতাকা বহন করছেন ক্যামেরুনে জন্মগ্রহণ করা সিন্ডি গাম্বা। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ সত্যিই এবারের মত গ্রেট হয়ে ওঠে কিনা তা দেখা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
Discussion about this post