কথায় আছে ‘রেগে একেবারে কাঁই’। তা এই রাগ মানুষকে অনেক সময় ভুল পথে যেতে বাধ্য করে। তাই রাগ হতাশা দুঃখ এসব বের করা না গেলে বড্ড বিপদ। অনেকেই রাগ না করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বটে, তবে তা কি এতই সহজ? ব্যক্তিগত হোক, বা কাজের জায়গা– সব জায়গাতেই রাগ হওয়ার মত ঘটনা নিত্যদিনই ঘটতে থাকে। তাই রাগ করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু আসল কথা হল আমরা চাইলেই সব জায়গায় বা সবার কাছে নিজেদের রাগ উজাড় করতে পারি না। মুশকিলটা সেখানেই, তাই রাগের পারদও চড়তে থাকে যথেচ্ছ ভাবে। কিন্তু যদি মনের সুখে রাগ মেটানোর জন্য আলাদা একটা ব্যবস্থাই করে দেওয়া হয় তাহলে খুব একটা মন্দ হয় না, কী বলেন? তাই এবছর ব্যাঙ্গালোরে তেমনই এক অভিনব ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা হল রেজ রুম। শুধুই মনের আর গায়ের ঝাল মেটানোর একটা জায়গা।
এই রেজ রুমে থাকবে কাঁচ, পোরসেলিন, প্লাস্টিক অথবা ধাতব কিছু দ্রব্য। আর আপনার হাতে দেওয়া হবে লাঠি বা লম্বা হাতলের হাতুড়ি। ব্যস! এবার ঘরে ঢুকে মনের সাধ মিটিয়ে ভাঙচুর করুন। ঠিক যেমন অনেকেই আছেন যাদের রাগ হলে হাতের সামনে থাকা জিনিসপত্র ছুঁড়ে দেন। তবে রেজ রুমে রাগ মেটানোর দামটাও সেই মত দিতে হবে বইকি! মাত্র ১০ মিনিট রাগ মেটানোর দাম ৫০০ টাকা। এটাই সবচেয়ে কম। এরপর ২০ মিনিটের জন্য ৭৫০ টাকা আর ৩০ মিনিটের জন্য ১৫০০ টাকা। দাম যত বাড়বে তত ভাঙার জিনিসও বেশি পরিমাণ দেওয়া হবে। জিনিস ভাঙতে গিয়ে যাতে কারোর ক্ষতি না হয় তাই ব্যবস্থা রয়েছে যাতে হেলমেট ও বিশেষ পোশাকেরও। শুধু ১৮ বছর বয়স হলেই ঢোকার ছাড়পত্র পেয়ে যাবে যে কেউ।
এই ব্যবস্থা মার্কিন মুলুকে অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে। প্রথম জাপান, তারপর আমেরিকা, ইংল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, সার্বিয়া ইত্যাদি স্থানে ধীরে ধীরে চালু হয়েছে। ২০১৭ তে প্রথম ভারতের ইন্দোরে একটি ক্যাফেতে চালু হয়েছিল এই ব্যবস্থা। সেখানে অবশ্য ভাঙচুড়ের শেষে পরিবেশন করা হয় দারুণ সুস্বাদু সব খাবার। তবে এখানে শুধু টাকার বিনিময়ে গায়ের রাগ মেটানোটাই আসল উদ্দেশ্য। এখন কথা হচ্ছে এভাবে রাগ কি আদৌ কমে? মনোবিদরা বলে থাকেন যে এভাবে কিছুক্ষণের জন্য স্বস্তি পাওয়া গেলেও রাগ কমানোর এটা বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে যোগাসনের উপকারিতাটাকেই তারা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
Discussion about this post