রাজনৈতিক সীমারেখা কখনো কখনো মুছে যায় মানবতার তাগিদে। সাম্প্রতিক ভয়াবহ দাবানলে যখন ইসরায়েল বিপর্যস্ত, তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সেই ফিলিস্তিন—যাদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা রয়েছে। গাজায় ইজরায়েলি বোমা হামলা, অবরোধ, এবং মানবিক সংকট বহু বছর ধরেই চলছে। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছে, প্যালেস্তিনীয়রা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার। আবার, ইজরায়েল বলে, তারা আত্মরক্ষা করেছে।
এই অবস্থায় ২০২৫ এর এপ্রিলে জেরুজালেম ও আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়া দাবানল ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে হাজার হাজার মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়, ধ্বংস হয় বহু ঘরবাড়ি ও বনভূমি। ঠিক সেই সময়, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ চারটি দমকল বাহিনী দিয়ে ইসরায়েলকে সহায়তায় পাঠায়। এই সাহসিক ও মানবিক উদ্যোগ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসা কুড়িয়েছে। ইসরায়েলের “Coordinator of Government Activities in the Territories” (COGAT)-এর মাধ্যমে এই সম্মিলিত অভিযান পরিচালিত হয়। আগুন নেভানোর কাজে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি দমকল বাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে।
প্রশংসা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি ফিলিস্তিনসহ প্রতিবেশী দেশ—মিশর, গ্রিস, ইতালি ও সাইপ্রাস—যারা এই সহায়তার হাত বাড়িয়েছে, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান। এই ঘটনাটি কেবল সামান্য আগুন নেভানোর গল্প নয়। মানবতা, সহানুভূতি ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। সারা পৃথিবী যখন দেখছে গাজা এবং সমগ্র প্যালেস্টাইনের মানুষ ইজরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত। যুদ্ধ, মৃত্যু, রক্তের বাতাবরণ। তখন মনুষ্যত্ব সেই বিভেদকে ভেঙে ফেলেছে কেবল অন্য মানুষকে সাহায্য করার শক্তি। সেখানে কোনো দেশ নেই, জাতি নেই, নেই কোনো বর্ডারের বা ধর্মের বাধা। আছে শুধুই মানুষ।
Discussion about this post