সব পালা পাব্বণের পরে এবার শীত আসার তোড়জোড়। শীতের রোদ গায়ে মেখে উপভোগ করার এক মোক্ষম জায়গা হল সমুদ্র। তাই পাহাড়প্রেমীরাও এই সময় পাহাড় এড়িয়ে পাড়ি দেন সমুদ্র সৈকতের দিকে। আজকাল দীঘা, পুরী এখন অতীত! মানুষ ঝুঁকেছে অফবিট সমুদ্র সৈকতের সন্ধানে। কলকাতার কাছে সেরকমই এক সমুদ্র সৈকতের ঠিকানা হল দাগারা, ওড়িশার এক নতুন অফবিট সমুদ্র সৈকত।
দীঘা থেকে মাত্র ৫৫ কিমি দূরে অবস্থিত নির্জনতা এবং সৌন্দর্য্যে ঘেরা এই সমুদ্র সৈকত। দাগারাকে স্থানীয় উচ্চারণে অনেকেই ‘ডোগরা’ নামেও ডাকেন। যতদূর চোখ যায় কেবল সোনালী বালিরাশি। একপাশে বিঘা জুড়ে সারি সারি ঝাউবন এবং আরেক পাশে সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন। এখনও প্রায় অনেকেই এই জায়গাটার নাম শোনেননি তাই কয়েক কিমি এই সৈকতে জনমানবের দেখা মেলে না। গোটা সৈকত জুড়ে রয়েছে অকৃত্রিম এক সৌন্দর্য্য, অগোছালো গ্রাম্য পরিবেশ আর লাল কাঁকড়ার ছড়াছড়ি। এখানকার অন্যতম এক আকর্ষণ হল বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক পাখি। সৈকতে হাঁটতে থাকলে প্লোভার, সি গাল প্রভৃতি নানা ধরনের পাখিগুলিই হয়ে উঠবে আপনার সঙ্গী। এককথায় দাগারাকে বলাই যায় – “Hidden Beauty of Odisha Coast”।
নিরালায়, নিভৃতে এক সমুদ্র সৈকতে অবকাশ যাপনের আদর্শ ঠিকানা এই দাগারা। কলকাতা থেকে দাগারার দূরত্ব জলেশ্বর হয়ে মোটামুটি ২৩০ কিমি। গাড়িতে সময় লাগে সাড়ে ৫ ঘন্টার মত। এছাড়া হাওড়া থেকে ট্রেনে পৌঁছানো যায় জলেশ্বর। স্টেশনে নেমে অটো ধরে ৩৫ কিমি দূরের দাগারায় পৌঁছতে সময় লাগে দেড় ঘন্টার মত। ভাড়া কম বেশি ১০০০ টাকা। তবে হ্যাঁ, এখনও খুব উচ্চমানের বা বিলাসবহুল থাকার ব্যবস্থা এখানে গড়ে ওঠেনি। থাকার মধ্যে ঝাউবন লাগোয়া নতুন তৈরি হওয়া দাগারা নেচার ক্যাম্প ও রয়েছে কিছু হোমস্টে কিংবা হোটেল। তাহলে! পুরী, দীঘা, মন্দারমণি কিংবা চাঁদিপুর তো অনেক হল, এবার শীতে ঘুরে আসুন ওড়িশার অফবিট সমুদ্র সৈকত দাগারা থেকে।
চিত্র ঋণ – শুভ্রাংশু দাসগুপ্ত
Discussion about this post