“মুগ্ধ সবে তব রূপ লাবণ্যে করেছে প্রাণ ভরি।” কিন্তু এই রূপের বাহার যদি গোঁফে প্রকাশ পায় তবে? এ ঠিক যেন গোঁফে তা দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মত! প্রাচীন কালে রাজ রাজাদের বাহারি গোফ দাঁড়ি তাদের আভিজাত্যের প্রতিক বলে মনে করা হত। সেই অনুযায়ী তাদের বাহারও ছিল অনন্য। হালে গোফ দাঁড়ি নেহাতই হয়ে গিয়েছে ঠাঁট বাটের একটি অংশ। কিন্তু এ যে কোনো প্রতিযোগিতার অঙ্গও হতে পারে তা কি কেউ কখনো ভাবতে পেরেছে! আর এই অভাবনীয় অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে জার্মানি। গোঁফ দাঁড়ি নানান আকার আকৃতিতে পাকিয়ে প্রতিযোগিতায় সামিল হন গোঁফওয়ালারা। আর এদের নিয়েই জার্মানি’র সাউথ বাভারিয়ানে হয়ে গেলো এক বিচিত্র প্রতিযোগিতা।
এই প্রতিযোগিতা প্রথম চালু হয় ১৯৯০ সালে জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট এলাকায়। আর এখন প্রতি দুই বছর অন্তর আন্তর্জাতিকভাবে হয় এই প্রতিযোগিতা। নানান প্রান্ত থেকে আসেন প্রতিযোগিরা। তাদের কারো গোঁফ সূচালো, কারোর চন্দ্রাকৃতির, কেউ আবার গোঁফ পাকিয়েছেন ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী। কারুর গোঁফ উঠেছে ধাপে ধাপে, আবার কেউ দিয়েছেন জ্যামিতিক আকার। আবার কারো গোঁফের সাথে দাঁড়িও পেয়েছে সমান বাহার। বাহারি এমন নকশার গোঁফেরও রয়েছে বাহারি নাম। ইংলিশ, শেভরণ, ডালি, পিরামিড কিংবা হর্স স্যু আকৃতির গোঁফ সবার নজর কেড়েছে। জার্মানিতে আয়োজিত বার্ষিক এহেন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন বিভিন্ন শহরের শতাধিক মানুষ।
এমন বিশালাকায় গোঁফ দাঁড়ির বাহার পরিচর্যা করাও এক কঠিন ব্যপার। একদল নিজেরাই নানা কায়দায় যত্ন নিয়ে কাট ছাঁট করে বানিয়েছেন গোঁফ। করতে হয় প্রচুর পরিচর্যা। আরেক দল প্রকৃতিগতভাবেই গর্ব করার মতো দাড়ি গোঁফের মালিক, দিতে হয়নি তেমন কোনো পরিচর্যা। এ যেন ঠিক ঈশ্বরের দান। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের থেকে সেরাদের নির্বাচিত করেন বেশ কয়েকজন বিচারক। আর তাদের ভোটেই এবার নির্বাচিত হয়েছেন সেরা তিন গোঁফিয়ে।
মানুষের শখের মধ্যেও থাকে বৈচিত্র। আর এরই মধ্যে কারো কারো কাছে শখ হয়ে ওঠে নেশা। বিশ্ব জুড়ে এমন মানুষের সংখ্যা খুব বেশি না হলেও তাঁদের আলাদা করে চিনে নিতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। এমনই সব অদ্ভুতুড়ে শখ থুড়ি নেশাকে তারা নিয়ে আসেন বিশ্ব দরবারে। আর জিতে নেন সেরার খেতাব। আর এই ‘নেশা’ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন প্রান্তে নতুন নতুন আকারে নতুন রূপ নিয়ে।
Discussion about this post