নারী মানেই দুর্বল, নারী মানেই অবলা। যুগ যুগ ধরে নারীদের প্রতি এমনই মানসিকতা পোষণ করে আসছে সমাজ। আজকের দিনে তার খানিক পরিবর্তন ঘটলেও এই জরাজীর্ণ মানসিকতা আজও বর্তমান। বিশেষত শারীরিকভাবে দুর্বলতাকে লক্ষ্য করেই নারীদের প্রতি অত্যাচার বেশি হয়। বলা বাহুল্য এক্ষেত্রে শুধু তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোই নয় বরং বিশ্বব্যাপী সর্বত্র একই ছবি দেখা যায়।
খুব বেশি দিন নয়, ঘটনাটি ২০১৭ সালের। অ্যালিস লিয়েন হুয়া নামের বছর কুড়ির এক মহিলা পেনাম্পাং থেকে নিজের গাড়িতে সাবাহে ফিরছিলেন। যাত্রাপথে তিনি একাই ছিলেন। হঠাৎই অ্যালিস লক্ষ্য করেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী তার পিছু নিয়েছে। সময়টা রাত ১১:৪০। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও পরে তিনি গাড়ির বেগ বাড়ালেন। তবে ততক্ষণে ওই দুই ব্যাক্তি গাড়ির পথ আটকে দাড়ায়। এরপর গাড়ির কাঁচ নামিয়ে তাকে বেরিয়ে আসতে বলা হলে খানিক ঘাবড়েই যান অ্যালিস। তবে তা প্রকাশ না করে গাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখোমুখি দাড়ান ওই দুই ব্যাক্তির। সঙ্গে সঙ্গে ধারালো অস্ত্র বের করে অ্যালিসের থেকে টাকা পয়সা কেড়ে নিতে উদ্যোগী হয় তারা। একজন অ্যালিসের গাড়ির ভিতর ঢুকে খানা তল্লাসি চালাতে থাকলে অন্যজন হঠাৎই তাকে টেনে পাশের ঝোপের দিকে নিয়ে যেতে উদ্যত হয়।
অ্যালিসকে টেনে ঝোপের দিকে নিয়ে যাওয়া ব্যাক্তিটি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘুষিতে ধরাশায়ী হয়। এরপর বেশ আরো কিছু আঘাতে একসময় জ্ঞান হারায়। এমন অতর্কিত দৃশ্য দেখে দ্বিতীয়জন পালাতে গেলে অ্যালিস তাকে গাড়ি দিয়েই ধাক্কা দেন। দুর্ভাগ্যবশতঃ সেদিন রাতে ওই দুই অপরাধী জানত না আসলে তারা কার ওপর আক্রমণ করতে চলেছে। প্রাক্তন মার্শাল আর্ট প্রতিযোগী অ্যালিস লিয়েন হুয়া একসময় মার্শাল আর্টে সাবাহকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। যদিও এই ধস্তাধস্তিতে খানিক আঘাতপ্রাপ্ত তিনিও হন। এরপর বেশ সময় কেটে গেলে নিজের ফেসবুকে ঘটনাটি শেয়ার করেন। তার মতে সেই সময় আইনি সমস্যায় পড়তে চাননি তাই ঘটনাটি কাউকে জানতে দেননি। এই নিয়ে খানিক জলঘোলা হলেও অ্যালিসের বর্ণনা পড়ে গোটা নেট দুনিয়া তাকে সমর্থন করে তার প্রশংসায় মুখরিত হয়। আসলে কোথাও না কোথাও এমন ঘটনাগুলোই সমাজে ইতিবাচক ছাপ ফেলে। প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নারীদের এগিয়ে যেতেও মানসিক সাহস জোগায়।
Discussion about this post