কখনও ঠাঁই মিলেছে দন্ডকারণ্যের রিফিউজি ক্যাম্পে তো কখনও পেটের ভাত জোগাড়ের লড়াই। যে বয়সে স্কুলের ব্যাগ কাঁধে ওঠে, সেই বয়সে চায়ের দোকানে খেটে উপার্জনের চেষ্টা শুরু। চোখের সামনে দিদিকে খিদেতে শুকিয়ে মরতে দেখেছেন। জীবনযুদ্ধে হার না মানা মানুষটা শুরু করলেন যাদবপুরে রিকশা টানতে। একদিন তাঁর রিক্সায় ওঠা এক ভদ্রমহিলাকে সাহস করে জিজ্ঞেন করলেন ‘জিজীবিষা’ শব্দের অর্থ। রিক্সাচালকের এহেন প্রশ্নে কৌতূহল জাগলো মহিলার। তিনি নিজের ম্যাগাজিনে ওই রিক্সাচালককে নিজের গল্প লিখতে বললেন। সেই মহিলা ছিলেন স্বয়ং মহাশ্বেতা দেবী। এভাবেই রিকশা চালককে চিনতে শুরু করল বাংলা। ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার’ এবং জাতীয় স্তরের বিভিন্ন পুরস্কার জয় করেছেন। তবে আজ তিনি এক চ্যালেঞ্জিং ভূমিকায়। পশ্চিমবঙ্গের বলাগড় আসনের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন গত বিধানসভা ভোটে।
এবারেও তিনি নিলেন এক ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত। তাঁর বিধানসভা ক্ষেত্রের মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছনোর জন্য কিনে ফেললেন একটি টোটো। তাঁর কথায়, “আমি আজ টোটো কিনেছি। অন্যরা জন্মজাত নেতা, বিধায়ক তাঁদের কথা আলাদা। আমি রিক্সাওয়ালা, মুটে-মজুর, ঝিয়ের সন্তান। আমাকে কী আর বাবুগিরি দেখানো চলে!” তিনি আরও বলেন, “নিজের টোটো নিজেই চালিয়ে চলে যাবো প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মানুষের ঘর থেকে মুড়ি,আর লাল চা চেয়ে খাবো, খিদে পেলে পাট পাতার ঝোল দিয়ে মেখে খেয়ে নেবো কোন ঘরে দুমুঠো ভাত। ঘুম পেলে শুয়ে পড়বো কোন আম গাছের ছায়ায়। আর শুনবো মানুষের মনের কথা। আগামী পাঁচ বছর এই হবে আমার কাজ।”
Discussion about this post